ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তিন দশক পূর্তি উৎসবে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভুয়া সাংবাদিকদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, লেখা নাই, পড়া নাই, সাংবাদিকতা বোঝে না, সাংবাদিকতার ধারেকাছেও নাই—এমন অনেকে সারাক্ষণ সরকারি অফিসে বসে থাকে। ভুয়া সাংবাদিকেরা যাতে অপসাংবাদিকতার বিকাশ ঘটাতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তিন দশক পূর্তি উপলক্ষে রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংগঠনটির কার্যালয়ে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেগুনবাগিচা এলাকার সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে আসেন ওবায়দুল কাদের। অতিথিদের নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তিনি। তারপর কবুতর উড়িয়ে তিন দশক পূর্তি উৎসবের উদ্বোধন করেন। এরপর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। পরে কেক কাটেন।
শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সমালোচনার বিরুদ্ধে নই। সমালোচনাই শুদ্ধ করে। সমালোচনা আমরাও করি। সেটা গঠনমূলক সমালোচনা হওয়া প্রয়োজন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনারা স্বাধীনতা চান সরকারের কাছে। কিন্তু নিজেরা যেখানে কাজ করেন, সেখানে কি আপনি যা চাইছেন, তা লিখতে পারেন? আপনি যা দেখেন, তা কি লিখতে পারেন? সেটাই আমার বক্তব্য।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গঠনমূলক ও সৃজনশীল সাংবাদিকতাকে প্রধানমন্ত্রী সব সময় উৎসাহিত করেন। আওয়ামী লীগও একই নীতি অনুসরণ করে। কোনো সাংবাদিক যাতে অর্থনৈতিকভাবে হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য সতর্ক আছি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, সাংবাদিক হিসেবে শক্তিশালী হতে চাইলে পেশাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দলমত-নির্বিশেষে সাংবাদিকেরা জনকল্যাণে শক্তি ব্যবহার করবেন বলে আশা করি।
‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না’
ওবায়দুল কাদের ও জি এম কাদের চলে যাওয়ার পর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আসেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তিন দশক পূর্তি অনুষ্ঠানে বিএনপির পক্ষ থেকে কেক কাটেন।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে রিজভী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের জন্য সুখকর বিষয় নয়। সাংবাদিকদের জন্য এই আইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এমন একটি আইন, যে আইন থেকে সহজে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, যাঁরা মুক্ত চিন্তার মানুষ, তাঁরা তাঁদের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে কারাবন্দী হয়েছেন। এমন একটি আইন দেশে বিদ্যমান। এমন পরিস্থিতিতে সংবাদপত্রের পথচলা দুঃসাধ্যের বিষয়।
এদিকে তিন দশক পূর্তি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরা। দুপুর ১২টার দিকে সেগুনবাগিচায় সংগঠনের প্রধান কার্যালয় থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। সেগুনবাগিচার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবার একই স্থানে এসে এটি শেষ হয়। এ সময় বাদক দলের সদস্যরা বিভিন্ন গানের সুর তোলেন। সঙ্গে ছিলো সাজানো ঘোড়ার গাড়ি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিনসহ সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতা ও সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।