সাত দশক আগে শুরু হয়েছিল নির্মাণকাজ। লোকমুখে শোনা যায়, স্রেফ সড়ক নির্মাণ করতেই নাকি তিন হাজারের বেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জাতীয় সড়ক তৈরির নেপথ্যেও সেই চীন।
১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল সিচুয়ান-তিব্বত জাতীয় সড়কপথের। বিশ্বের অন্যতম দুর্গম এলাকার উপর দিয়ে এই সড়ক তৈরির পরিকল্পনা করেছিল চীন।
যখন সিচুয়ান-তিব্বত সড়ক তৈরির কাজ শুরু হয় তখন চীনের কাছে রাস্তা নির্মাণের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রের ভান্ডার ছিল না। তাই সাধারণ যন্ত্র দিয়েই সড়ক তৈরির কাজ শুরু করেন শ্রমিকেরা।
লোকমুখে শোনা যায়, ড্রিলিং মেশিন, বেলচা এমনকি হাতুড়ির মতো সাধারণ যন্ত্র দিয়ে সিচুয়ান-তিব্বত সড়ক তৈরির কাজ শুরু করেন শ্রমিকেরা। শ্রমিকদের পাশাপাশি স্থানীয়েরাও সড়ক নির্মাণের কাজে হাত লাগিয়েছিলেন।
সিচুয়ান-তিব্বত সড়ক তৈরিতে শ্রমিকদের সহায়তা করেছিলেন সেনাও। তিন হাজারেরও বেশি মানুষ এই রাস্তা নির্মাণের কাজে প্রাণ হারিয়েছিলেন।
পরিবেশের প্রতিকূলতা এবং দুর্গম স্থানে রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে গড়ে প্রতি দু’কিলোমিটারে তিন জন শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন বলে স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রের দাবি।
১৯৫০ থেকে সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার চার বছর পর ১৯৫৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর সিচুয়ান-তিব্বত জাতীয় সড়ক জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
পূর্ব দিকে চেংদু থেকে পশ্চিম দিকে লাসা পর্যন্ত বিস্তৃত সিচুয়ান-তিব্বত জাতীয় সড়কের দৈর্ঘ্য দু’হাজার কিলোমিটারের বেশি।
মোট ১৪টি বরফাবৃত পর্বতের মাঝখান দিয়ে বিস্তৃত রয়েছে সিচুয়ান-তিব্বত জাতীয় সড়ক। এই পর্বতগুলির উচ্চতা চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার মিটারের মধ্যে।
সিচুয়ান-তিব্বত জাতীয় সড়কটি ১৬টি নদনদীর উপর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ এলাকায় মোট আটটি চ্যুতি অঞ্চল রয়েছে।
সিচুয়ান-তিব্বত জাতীয় সড়কের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে। তবে এই সড়কপথে রয়েছে পদে পদে বিপদ।
ধস নামার পাশাপাশি রয়েছে তুষারপাতের সম্ভাবনাও। সিচুয়ান-তিব্বত সড়কপথ বর্ষাকালেও বিপজ্জনক। রাস্তার মাঝে কাদা জমে ‘মাড ট্র্যাপ’-এর মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে গাড়ি দুর্ঘটনার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
সিচুয়ান-তিব্বত সড়ক যে ১৪টি পর্বতের মাঝখান দিয়ে বিস্তৃত, সেই পর্বতগুলির বেশির ভাগেরই সারা বছর বরফ গলে না। তাই সড়কপথে যাত্রা করলে আবহাওয়া অধিকাংশ সময় অনুকূল থাকে না।
সিচুয়ান-তিব্বত সড়কপথে মোট ৪৩০টি সেতু এবং ৩৭৮১টি কালভার্ট রয়েছে।
৮০ কোটি কিলোগ্রাম পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে সিচুয়ান-তিব্বত জাতীয় সড়ক। সূত্র: আনন্দবাজার
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।