মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। আজ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি স্মরণ করবে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানঘড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল হামিদ খান ভাসানী। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও তিনি জীবনের সিংহভাগই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। কৈশোরেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তার রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। ১৯৭১ সালের মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানান ভাসানী। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি।
রাজনীতির পাশাপাশি মওলানা ভাসানী সমাজ সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। লাইনপ্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতনবিরোধী আন্দোলনসহ সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন। তার উদ্যোগে কৃষকদের নিয়ে ১৯৫৭ সালের ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন বাংলাদেশের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ১৯৭৬ সালের ১৬ মে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লংমার্চে নেতৃত্ব দেন তিনি।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণীতে বলেছেন, মওলানা ভাসানী মজলুমের বন্ধু; সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ, অত্যাচারী শাসক ও শোষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এক সোচ্চার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। এ মুহূর্তে আধিপত্যবাদী শক্তি এবং তাদের এদেশীয় প্রতিভূদের রুখতে মওলানা ভাসানী প্রদর্শিত পথই আমাদের পাথেয়।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপি। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানকে আহ্বায়ক ও ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে সদস্য সচিব করে 'মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটি' গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির পক্ষ থেকে ঢাকা ও টাঙ্গাইলে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে সেমিনার, আলোচনা সভা ও মাজার জিয়ারত।
ভাসানী ফাউন্ডেশনও নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভাসানীর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল ও দোয়া, কাঙালিভোজ এবং আলোচনা সভা। এ ছাড়া অনেক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন শ্রদ্ধার সঙ্গে দিবসটি পালন করবে।