মধ্যরাতে ঢাকা আলিয়া মাদরাসার হলে ছাত্রলীগের সং*ঘর্ষ, আ*হত শতাধিক

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

রাজধানীর সরকারি মাদরাসা-ই আলিয়ায় ছাত্রলীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষে শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। কাশগরি (রহ.) হলে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ মাদরাসা-ই আলিয়ার কমিটি স্থগিত করেছে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত করেছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা না হলেও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় অর্ধশত ব্যক্তিকে আটক করেছে। ছাত্র না বহিরাগত, তা যাচাই চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মাদরাসা-ই আলিয়ার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাত আড়াইটার দিকে মাদরাসা ছাত্রলীগের সভাপতি মুরাদ হোসাইনের নেতৃত্বে কাশগরি (রহ.) হলে ভাঙচুর শুরু হয়। হলের রুমে রুমে গিয়ে ভাঙচুর ও মারধর করা হয় নেতাকর্মীদের। সংঘর্ষে জড়ায় সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বরকতের নেতাকর্মীরাও। হামলা চলাকালে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

তবে মুরাদ হোসাইন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রাতে আমি হলে ছিলাম না। তৃতীয় একটি পক্ষ এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। পরে পুলিশ ও প্রশাসন হলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।’

কামিল প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, গুলি আর বোমার শব্দে ঘুম ভাঙে। প্রায় ৩০-৪০ জন এই হামলায় অংশ নেন। হামলায় কারও মাথা ফেটেছে, কারও হাত ভেঙেছে। আমি কোনোমতে হল ছেড়ে পালিয়ে আসি।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হলে রুমের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। কাশগরি হলে ৬১টি রুম আছে। এর মধ্যে ছাত্রলীগ সভাপতি (সদ্য বিলুপ্ত কমিটি) মুরাদের নিয়ন্ত্রণে মাত্র ৫টি। অন্যগুলো সাধারণ সম্পাদক (সদ্য বিলুপ্ত কমিটি) রাকিবুল ইসলাম বরকতের নিয়ন্ত্রণে। আর ইব্রাহিম হলে মোট ১৫ রুমের মধ্যে মুরাদের ৪টি, বরকতের নিয়ন্ত্রণে ১১টি। হলে গণ্ডগোল বাধিয়ে নিজের রুম সংখ্যা বাড়ানোর জন্য মুরাদ তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করছেন নেতাকর্মীরা।

আলিয়া মাদরাসার এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, দুই হলের মধ্যে মুরাদের রুম হাতেগোনা। তিনি রুম বাড়ানোর জন্যই হামলা চালিয়েছেন। পরে এই হামলা নিয়ে সিনিয়র নেতারা বসেন, যাতে রুমের সংখ্যা বাড়ানো যায়। কিন্তু ঘটেছে উল্টো।

সরকারি মাদরাসা-ই আলিয়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (সদ্য বিলুপ্ত কমিটি) রাকিবুল ইসলাম বরকত বলেন, সভাপতিসহ তার লোকজন এই হামলা করেছেন। দীর্ঘদিনের ক্ষোভ মেটানো ও আধিপত্য বিস্তার করতেই ঘুমন্ত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। পুলিশ গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। হল কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়েই শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দিচ্ছে।

হল বন্ধের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত মাদরাসা কর্তৃপক্ষ না জানালেও মৌখিকভাবে তাদের চলে যেতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের। সার্বিক বিষয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রশিদ বলেন, মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে কিছুই বলতে পারছি না। বৃহস্পতিবার রাতে হামলা, ভাঙচুর নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি অধ্যক্ষ।

মধ্যরাতে তাণ্ডবের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। তবে সন্দেহভাজন হিসেবে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার জায়েন উদ্দীন মুহাম্মদ জিয়াদ। তিনি বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বহিরাগত সন্দেহে কয়েকজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024189949035645