মামলা না করেই ফিরে গেলেন ছাত্রদের হাতে মা*র খাওয়া বরযাত্রীরা

দৈনিকশিক্ষাডটকম, রাজশাহী |

রাজশাহীতে চলন্ত ট্রেনের ভেতরে একদল ছাত্রের হাতে মার খাওয়া বরযাত্রীদের কেউ ভয়ে মামলা না করেই বাড়ি চলে গেছেন। তারা বলছেন, মামলা করলেই আদালতে যেতে হবে। আর আদালতের বারান্দা থেকে নিচে নামলেই আবার মার খেতে হবে।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া আটটায় ট্রেনের ভেতরে বরযাত্রীদের ওপরে হামলা করেছেন একদল ছাত্র। জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে বরযাত্রীদের একজনের হাত ভেঙে দিয়েছেন তারা। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের টাকাপয়সা লুট করার অভিযোগ উঠেছে। জেলার আড়ানী স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন ওই বরযাত্রীরা। তারা গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাটে যাচ্ছিলেন।

হামলাকারীদের একজনকে (অপ্রাপ্তবয়স্ক) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছিল জনতা। তাকে রাজশাহী জিআরপি থানায় আটক রাখা হয়েছিল। কিন্তু আহত ব্যক্তি বা তাঁদের স্বজনেরা আর মামলা করতে আসেননি। বারবার জিআরপি থানা থেকে মামলা করতে আসার জন্য তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা সাড়া দেননি।

রাজশাহী জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল কর্মকার গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ভুক্তভোগীরা কেউ মামলা করতে আসেননি। শেষ পর্যন্ত যে কিশোরকে আটক করা হয়েছিল, তার পরিবারের লোকজনকেই দায়িত্ব দেওয়া হয় ভুক্তভোগীদের খুঁজে আনার জন্য। অন্তত মামলা না করলেও লিখিতভাবে তাঁদের বলতে হবে যে এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ নেই। তারপরই আটক কিশোরকে থানা থেকে ছাড়া হবে।

ওসি বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আহত ব্যক্তির ফুফা থানায় এসে লিখিত দিয়ে যান যে এ হামলার ব্যাপারে তাঁদের কোনো অভিযোগ নেই। তাঁরা মামলা করতে চান না। এরপর আটক কিশোরকে তার বাবার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে কথা বলতে আহত আরিফুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে একজন ফোন ধরে তাঁর বড় ভাই পরিচয় দেন। তিনি নিজের নাম বলতে চাইলেন না। বলেন, ‘ভাই, আমরা মার খাইছি। চলে আইসি। ঝামেলা শেষ। মামলা করলেই কোর্টে যাতি হবি। আর কোর্টের বারান্দা থেকে নামলেই আবার মার খাতি হবি। আমার জেলা রাজশাহী। জেলা শহরে যাতিই হবি। আমরা বারবার মার খাতে পারব না।’

থানায় মুচলেকা কে লিখে দিয়েছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জিআরপি থানার এসআই বারবার ফোন করেছে। আমরা বারবার বলেছি, মামলা করব না। আমরা তো থানাতে যাইনি। মুচলেকা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’ তাঁদের ফুফা পরিচয় দিয়ে একজন মুচলেকা দিয়েছেন—এ কথা শুনে তিনি বলেন, তাহলে রাজশাহীতেই তাঁদের একজন ফুফা আছেন, তিনি যেতে পারেন।

জনতার হাতে আটক ছাত্রের বয়স ১৭ বছর। বাড়ি রাজশাহী নগরের আসামি কলোনি বউবাজার এলাকায়। সে একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। তার সঙ্গে হামলায় অংশ নেয় আরও কয়েকজন কিশোর ও দুজন বড় ভাই। ওই দুই বড় ভাই হলেন মাইনুল (২৬) ও মনির (২৪)। মনির ও মাইনুল ছাড়া অন্যরা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। খবর পেয়ে তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে স্টেশনে অপেক্ষায় ছিল।

আটক হামলাকারী কিশোর সকালে বলেছিল, তারা ১০-১২ জন মিলে সকালে ট্রেনে নাটোরের আব্দুলপুর স্টেশনে লুচি খেতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার সময় কমিউটার ট্রেনের ভেতরে বরযাত্রীদের সঙ্গে তাদের ঝামেলা হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড পাওয়ার যৌক্তিকতা - dainik shiksha প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড পাওয়ার যৌক্তিকতা ঢাবিতে তোফাজ্জল হ*ত্যার দায় স্বীকার ৬ শিক্ষার্থীর - dainik shiksha ঢাবিতে তোফাজ্জল হ*ত্যার দায় স্বীকার ৬ শিক্ষার্থীর সাত কলেজ : অধ্যাপক মামুনের প্রস্তাব ও ইডেন কলেজ ছাত্রীর প্রতিক্রিয়া - dainik shiksha সাত কলেজ : অধ্যাপক মামুনের প্রস্তাব ও ইডেন কলেজ ছাত্রীর প্রতিক্রিয়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা - dainik shiksha ডেঙ্গু প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা মামলা না করেই ফিরে গেলেন ছাত্রদের হাতে মা*র খাওয়া বরযাত্রীরা - dainik shiksha মামলা না করেই ফিরে গেলেন ছাত্রদের হাতে মা*র খাওয়া বরযাত্রীরা শিক্ষকদের আতঙ্কের নাম মিনিস্ট্রি অডিট! - dainik shiksha শিক্ষকদের আতঙ্কের নাম মিনিস্ট্রি অডিট! দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025320053100586