মাদরাসার চামড়ার গাড়ি আটকে এসআইয়ের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, চট্টগ্রাম |

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা এলাকায় মাদরাসার চামড়াবাহী একটি পিকআপ ভ্যান পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার চৌমুহনী মোড়ের পাশে কালাবিবির দিঘী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পিকআপ ভ্যানটিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে চামড়াগুলোর মালিক মাদরাসা কমিটির অনুরোধে গভীর রাত ৩টার দিকে চামড়াবাহী পিকআপটিকে ছেড়ে দেয়া হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রায় কয়েক ঘণ্টা আটক থাকায় চামড়াগুলো অনেকটা পচে যায়। এতে করে নামমাত্র মূল্যে চামড়াগুলো বিক্রি করতে হয়েছে। 

এ বিষয়ে আনোয়ারা থানা পুলিশ জানিয়েছে, চামড়া পরিবহনে বিধিনিষেধ রয়েছে। এ জন্য গাড়িটিকে আটক করা হয়েছিল। পরে যাচাই-বাছাই করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত চামড়া মনিটরিং সেলের একজন সদস্য জানিয়েছেন, চামড়া পরিবহনে কোনো বিধিনিষেধ নেই। শুধুমাত্র ঢাকার ক্ষেত্রে কয়েক দিন পর চামড়া প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া, সারা দেশে চামড়া পরিবহনে কোনো বিধিনিষেধ নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতকানিয়া উপজেলার চরতী ইউনিয়ন থেকে চামড়াগুলো নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। দক্ষিণ চরতী মজিদিয়া দাখিল মাদরাসা কমিটির পক্ষ থেকে প্রতি বছরের রীতি অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কোরবানি দেয়া পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হয়। এরপর এগুলো চট্টগ্রামের আতুরার ডিপো এলাকায় আড়তে বিক্রি করা হয়। সোমবার কোরবানি দেয়া অন্তত ১২৫টি গরুর চামড়া সংগ্রহ করে মাদরাসা কমিটি। এরপর রাতে এগুলো বাঁশখালী দিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে পাঠানো হয়।

গাড়িটি আনোয়ারা উপজেলার কালাবিবির দিঘী এলাকায় পৌঁছালে থামানোর সংকেত দেয় উপ-পরিদর্শক (এসআই) হোসেন ইবনে নাঈম ভুঁইয়ার নেতৃত্বে একটি টিম। এরপর তিনি গাড়িচালককে জানান যে, চামড়া পরিবহন নিষিদ্ধ। 

এ বিষয়ে গাড়িচালক হাবিবুর রহমান বলেন, স্যার (এসআই হোসেন ইবনে নাঈম ভুঁইয়া) আমাকে দ্রুত দুই লাখ টাকা ম্যানেজ করে দিতে বলেন। না হলে চামড়া পাচার আইনে মামলা দেয়া হবে বলে জানান। আমি বিষয়টি মাদরাসা কমিটিকে জানাই। এরপর স্যারদের সঙ্গে মাদরাসা কমিটির লোকজন কথা বলেন। স্যার কমিটির লোকজনকে থানায় যেতে বলেন এবং আমার গাড়িটিকে থানায় নিয়ে যান। এরপর কমিটির লোকজনের ওসি স্যারের কথা হলে রাত ৩টার দিকে গাড়িটি ছেড়ে দেয়া হয়।

মাদরাসা কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, মানিক মিয়া নামে আতুরার ডিপোর একজন আড়তদারের সঙ্গে প্রতিটি চামড়া ৩০০ টাকা করে দরদাম ঠিক হয়। এরপর মাদরাসার পক্ষ থেকে সংগ্রহ করা চামড়াগুলো পিকআপযোগে আড়তে পাঠানো হচ্ছিল। গাড়িটি আনোয়ারা থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা আটকে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। পরে আমরা ওসিকে জোর করে বলে গাড়িটি ছাড়িয়ে নেই। কয়েক ঘণ্টা দেরি হওয়ায় চামড়াগুলো অনেকটা পচে গেছে। একই সঙ্গে ততক্ষণে আড়তদারও চলে গেছে। এ কারণে চামড়াগুলো মাত্র ৫০ টাকা দরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পুলিশের কারণে মাদরাসার বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আমরা অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই হোসেন ইবনে নাঈম ভুঁইয়া বলেন, গাড়িটি আমরা ঢাকায় যাচ্ছে মনে করে আটক করেছিলাম। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ওসি স্যারসহ কথা বলে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

তবে, টাকা দাবির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের কোনো কিছু আমরা দাবি করিনি।

ঘটনার বিষয়ে জানতে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমেদকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026509761810303