ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার একটি মাদরাসায় কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকা উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির সুপারের বিরুদ্ধে। চাকরিবঞ্চিত এক প্রার্থীর সঙ্গে ওই সুপারের অডিও রেকর্ড ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর এলাকায় তোলপাড় চলছে। মইলাকান্দা ইউনিয়নের কাউরাট আকবর আলী দাখিল মাদরাসার সুপার আল মামুন আকন্দের ছবিযুক্ত ফেসবুক আইডি ‘শেষ বিকেলে মেয়ে’ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি অডিও রেকর্ডটি পোস্ট করা হয়। মাদরাসার ওই সুপারের বিরুদ্ধে দাখিল পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফর্ম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
চাকরিবঞ্চিত আবু রায়হান হৃদয় বলেন, ‘চাকরি দেয়ার বিষয়টি মাদরাসার সুপার নিশ্চিত করলে জমি বিক্রি করে টাকা সংগ্রহ করে ১ ডিসেম্বর তাকে ১০ লাখ টাকা দিই। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা আমার বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করবে, সেটাও জানান সুপার। হঠাৎ শুনতে পাই, সিদ্ধান্ত পরিবর্তন! আরও ৩ লাখ টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ চাকরিটা তখন গোপনে নিলামে তোলা হয়। তাদের কাক্সিক্ষত আরও টাকা দিতে না পারায় আমার চাকরি হয়নি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসার সুপার আল মামুন আকন্দ বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। চাকরিবঞ্চিত আবু রায়হান হৃদয়ের সঙ্গে ৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টা ৪৯ মিনিটে আমার মোবাইল ফোনে কথা হয়। তার কাগজপত্র সম্পর্কে সে জানতে চাইলে আমি বলেছি সামনাসামনি কথা হবে। তখন সে বলে, ১০ লাখ টাকা দিয়েছে, টাকা ফেরত দিতে হবে, যা সত্য নয়।
তিনি বলেন, ‘মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদের জন্য একটি জাতীয় ও একটি স্থানীয় পত্রিকায় ৯ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ৭ জন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করে। ৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় পাঁচজন অংশ নেন। তাদের মধ্যে চাকরিপ্রার্থী আবু রায়হানেরও আবেদন ছিল। লিখিত ও ব্যাবহারিক পরীক্ষা দিয়েছে। সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি।’
আর দাখিল পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার বিষয়ে আল মামুন বলেন, ‘এই অভিযোগও সত্য নয়।’ তবে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে রসিদ দিয়ে অর্থ নেওয়া হয়েছে, তা দেখতে চাইলে সুপার দেখাতে ব্যর্থ হন।
মইলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ওয়াজিদুল ইসলাম কামাল নিয়োগ বোর্ডে পদাধিকার বলে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, আমি অডিও রেকর্ডটি একাধিকবার শুনেছি। দুজনের কথা শুনে মনে হয়েছে মাদরাসার সুপার অনিয়মে জড়িত নন। এরপরও অভিযোগকারী প্রমাণ করতে পারলে ব্যবস্থা নেব।