মাদরাসায় নিয়োগে ঘুষ : ছাত্রলীগের নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

নওগাঁ প্রতিনিধি |

নওগাঁর মান্দায় মাদরাসায় চাকরি দেয়ার কথা বলে এক ছাত্রলীগ নেতার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়ার পর চাকরি না দিয়ে উল্টো নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোল্লা মো. এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার এ  ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি জামাল উদ্দীন শেখের। তিনি বিষয়টি জানিয়ে মান্দা থানার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে, সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মান্দা উপজেলার মশিদপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগে জন্য গত বছর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। ওই পদে ভারশোঁ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলী শেখের ছেলে ও ওই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল উদ্দীন শেখ চাকরি দেয়ার কথা বলে ১৫ লাখ টাকা চুক্তি করে উপজেলা চেয়ারম্যান মোল্লা মো. এমদাদুল হক। তিনি মশিদপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার সাবেক সভাপতি ছিলেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় তাকে ওই পদ ছাড়তে হয়েছে। তবে পদ ছাড়লেও তার মেয়ে মান্দা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবা সিদ্দিকা রুমাকে কৌশলে ওই মাদরাসার সভাপতি বানিয়েছেন। তাই তার মেয়ে মাদ্রাসার সভাপতি হওয়ায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে টাকার বিনিময়ে নিয়োগের জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়। আর দুই দফায় মোট ১৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়েছিলেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।

ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল উদ্দীন শেখ অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মান্দা উপজেলার চেয়ারম্যান মোল্লা মো. এমদাদুল হককে চার লাখ টাকা এবং তার মেয়ে মান্দা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মাদরাসার সভাপতি মোছা. মাহাবুবা সিদ্দিকা রুমাকে দুই লাখ টাকা দেই। বাকি টাকা নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার পরে দেবো বলে তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়। এর মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যানকে টাকা দেয়ার খবর শুনে মাদরাসার প্রিন্সিপাল মো. হারুন অর রশিদ এবং সহ-সভাপতি মো. মজিবর রহমানও আমার কাছে টাকা দাবি করে বসেন। উপায় না পেয়ে এক লাখ টাকা করে মোট দুই লাখ টাকা তাদের দেই। কিন্তু ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাস পর্যন্ত আমার নিয়োগ সম্পন্ন না হওয়ায় আমি চিন্তায় পড়ে যাই। এরমধ্যে গত মঙ্গলবার আমি জানতে পারি তারা নিয়োগ বোর্ড গঠন করে অন্য একজনকে চাকরি দেয়ার পরিকল্পনা করছে। বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি আমাকে মদ্যপ অবস্থায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও বেধড়কভাবে মারধর ও শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং আমাকে টাকা ফেরত বা চাকরি কোনোটাই দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আমি গরীব ঘরের সন্তান। টাকাগুলো অনেক কষ্টে জোগাড় করেছি। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে মজিদপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. হারুন অর রশিদের সঙ্গে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 

মজিদপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার সভাপতি ও মান্দা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবা সিদ্দিকা রুমা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, টাকা নিয়ে চাকরি দেয়ার অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। তাই টাকা নেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। 

টাকা নিয়ে চাকরি না দেয়া ও মদ্যপ অবস্থায় নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান  মোল্লা মো. এমদাদুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা। এর কোনো ভিত্তি নেই।

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ নুর-এ আলম সিদ্দিকী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত - dainik shiksha প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি - dainik shiksha আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির - dainik shiksha আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি - dainik shiksha পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান - dainik shiksha ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032949447631836