মাদরাসায় শিশু শিক্ষার্থী নির্যাতন

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

মাদরাসাপড়ুয়া আট বছর বয়সী শিশু সন্তানের জন্মদিনে মা গিয়েছিলেন দেখা করতে। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মায়ের পিছু নেয় শিশুটি। তখন শিক্ষক মাওলানা ইয়াহিয়া শিশুটিকে ঘাড় ধরে মাদরাসায় ফিরিয়ে নেয়, বেত দিয়ে বেদম পেটায়। শুক্রবার (১২ মার্চ) সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়,গত সোমবার হাটহাজারী উপজেলার সদরে আল মারকাযুল কোরআন ইসলামিক একাডেমি মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়লে এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। উপজেলা প্রশাসন শিশুটিকে মাদ্রাসা থেকে উদ্ধার করে। শিশুটির অভিভাবক শুরুতে এ নিয়ে অভিযোগ করতে রাজি না হলেও পরে মামলা করেছে। শিশু শিক্ষার্থীকে পেটানো শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

২০১০ সালের আগস্টে সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি দেয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা প্রায়ই মানা হয় না। দেশের মাদ্রাসাগুলোয় প্রায়ই শিশু নিপীড়ন করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরেও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও অনেক শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক শাস্তির শিকার হচ্ছে। নির্যাতনের অনেক ঘটনাই থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে। হাটহাজারীর উক্ত মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতনের ভিডিও চিত্র না থাকলে হয়তো এ ঘটনাও মানুষ জানতে পারত না।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সব ধরনের নির্যাতনের অবসান ঘটাতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি নির্দেশনা মানছে কিনা সেটা কঠোরভাবে মনিটর করতে হবে। যারা নির্দেশনা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী নির্যাতনের পেছনে এক শ্রেণীর অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গির দায় রয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। কোন কোন অভিভাবক মনে করেন, শিশুকে না মারলে মানুষ হবে না বা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীকে একটু মারধর করবেনই। তাদের এমন ভ্রান্ত মনোভাবের কারণে শিক্ষার্থী পেটানোকে এক শ্রেণীর শিক্ষক নিজেদের অধিকার হিসেবে বিবেচনা করেন। হাটহাজারীতে নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা-বাবা উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগই করতে চাননি। এমনকি শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদনও করেছিলেন। শিক্ষার্থী নির্যাতন বন্ধ করতে হলে পরিবার ও সমাজের মনোভাব বদলাতে হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028889179229736