মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ১১ দফা জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া লিখিত বক্তব্যে বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য এখন পাহাড়সম। এ বৈষম্য দূরীকরণের জন্য সমিতির ব্যানারে শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছেন। বেসরকারি শিক্ষকেররা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১,০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা প্রাপ্তির পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

তিনি আরো বলেন, গত কয়েক বছর কোনো প্রকার বাড়তি সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অমানবিকভাবে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কাটা হচ্ছে। পূর্বে সরকারি-বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক-এর বেতন স্কেল একই থাকলেও বর্তমানে বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চেয়ে এক ধাপ নিচে পেয়ে থাকেন।

সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৬ষ্ঠ গ্রেডে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা ও বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৭ম গ্রেডে ২৯ হাজার টাকা এবং এন্ট্রি লেভেলে সরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেডে ১৬ হাজার টাকা ও বেসরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক ১১তম গ্রেডে ১২ হাজারে ৫০০ টাকা পেয়ে  থাকেন। তা ছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদানের বিধান না থাকায় উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। নানা কারণে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো এমপিওভূক্ত হতে পারেনি। এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলির কোন সুযোগ না থাকায় অনেকেই দূর-দূরান্তে শিক্ষকতা করার কারণে তাদের বৃদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবার-পরিজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬৫ করা হলেও স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা এখনো ৬০ বছরই রয়েছে। শিক্ষাপ্রশাসনের কোনো স্তরেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়নের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠনের কথা বলা হলেও এখনো তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বহু আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এখনো অনেকাংশেই অবাস্তবায়িত রয়েছে।

তাদের দাবিগুলো হলো-১. মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্টকরণসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরিকরণের লক্ষ্যে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ’ করা। ২. বিদ্যমান শিক্ষা কারিকুলামের পরিবর্তে যুগোপযোগী, আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষা কারিকুলাম প্রবর্তন করা। ৩. সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিসা ভাতা প্রদান করা। ৪. সরকারি স্কুলের ন্যায় বেসরকারি স্কুলের ‘প্রধান শিক্ষক’ -এর বেতন স্কেল ৬ষ্ঠ গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষক-এর ১০ম গ্রেডে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক-এর উচ্চতর স্কেল প্রদান করা। ৫. এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি প্রথা চালু করা। ৬. সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পেনশন প্রথা চালুকরণ এবং চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদানসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা। ৭. শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় ৬৫ বছরে উন্নীতকরণ। ৮. পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ন্যায় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষাপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন করা। ৯. শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সকল বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর দ্রুত বাস্তবায়ন করা। ১০. ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি প্রথা বিলুপ্ত করে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় পরিচালনা করা। ১১. স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত করা।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027079582214355