মানবিক হতে বলায় পরীক্ষা স্থগিত, বিপাকে চবি শিক্ষার্থীরা

চবি প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের ৫০৯ নম্বর কোর্সের পরীক্ষার আগের দিন এক শিক্ষার্থীর মায়ের মৃত্যু হয়। শোকাহত সহপাঠীর প্রতি সহর্মমিতা জানিয়ে মাস্টার্সের বাকি শিক্ষার্থীরা পরদিন ওই কোর্সের পরীক্ষা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্তের বিষয়টি বিভাগীয় সভাপতিকে মোবাইল ফোনে জানিয়ে মানবিক কারণে পরীক্ষাটি স্থগিত করার জন্য আবেদন জানান তাঁরা। তবে বিভাগের সভাপতি ওই পরীক্ষা স্থগিত না করে বাকি সব পরীক্ষা অনিবার্য কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বারবার অনুরোধ করেও ১ মাস ২০ দিন ধরে পরীক্ষার স্থগিতাদেশ তুলে না নিয়ে উল্টো একটি কমিটি গঠন করেছে বিভাগ।

সর্বশেষ পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে উপাচার্যের কাছে চিঠি দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে প্রক্টরের মাধ্যমে উপাচার্যের কাছে চিঠি দেন মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা।

চিঠিতে বলা হয়, ‘মাস্টার্সের পরীক্ষা গত ২১ আগস্ট শুরু হয় এবং ৪ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ছয়টি কোর্সের পরীক্ষা বাকি থাকতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিভাগের সভাপতি এক নোটিশে পরীক্ষার স্থগিতাদেশ দেন। এই সিদ্ধান্ত আমাদের বিব্রত করেছে। এই নোটিশের পর আমরা লিখিত ও মৌখিকভাবে অন্তত ২০ বার সভাপতি ও সব শিক্ষকের কাছে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করেছি। ইতিমধ্যে ১ মাস ২০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি, যা আমাদের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলছে।’

বিভাগের অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে সিআর (ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ) মারজান আক্তারের মা মারা যান। সংবাদটি শোনার পর অনেকেই তাঁর বাসায় ছুটে যান সমবেদনা জানাতে।

পুরো দিন তাঁরা সেখানে ছিলেন। পরদিন পরীক্ষা দেওয়ার মতো অবস্থা ছিল না মারজানের। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় পরদিন সিএজে-৫০৯ পরীক্ষাটি স্থগিত করার জন্য বিভাগের সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সময়স্বল্পতার কারণে বিভাগে এসে লিখিতভাবে আবেদন দিতে পারেননি। কিন্তু বিভাগের সভাপতি তাঁদের অনুরোধের কোনো গুরুত্ব না দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেন।

জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি রওশন আক্তার বলেন, ‘পরীক্ষা না দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের জানায়নি। আমরা পরীক্ষার দিন তাদের জন্য অপেক্ষা করেছি। ৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ জন ছাড়া আর কেউ আসে নাই। একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এমএসএসের সব পরীক্ষা

স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়। পরে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা নেওয়ার জন্য একটি দরখাস্ত দেয়। তাদের দরখাস্ত অনুযায়ী একাডেমিক কমিটি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য পরীক্ষা কমিটিকে সুপারিশ করে। পাশাপাশি তারা কেন এমন করল, তা বের করার জন্য একটি সত্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের একটি দরখাস্ত আমি পেয়েছি। দরখাস্তটিতে সুপারিশ করে উপাচার্যের কাছে ফরওয়ার্ড করেছি। উপাচার্য পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027790069580078