দৈনিক শিক্ষাডটকম, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ঘোষপাড়া এলাকায় একটি মেসে ছাত্রীদের গোসলের ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। ছাদ থেকে লাঠিতে মোবাইল বেঁধে মেস মালিকের ছেলে ভিডিও করছিল বলে অভিযোগ ছাত্রীদের। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঘটনা ক্যাম্পাসের বাইরের বলে ব্যবস্থা নেওয়ার ভার পুলিশের ওপর ছেড়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশও।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো সুরাহা না পেয়ে বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। তারা অবিলম্বে মেস মালিকের ছেলের বিচার দাবি করেন। সেখানে তারা তিন-চার ঘণ্টা অবস্থান করেন। পরে প্রক্টর ছুটিতে থাকায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারীকে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ওই ঘটনার বিচার দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেন।
এর আগে ঘোষপাড়ার মেস মালিক হানিম সরকারের ছেলে তুহিন সরকারের বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে ৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ৭ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মেসের পঞ্চম তলায় ওই ছাত্রী গোসলে যান। এ সময় তিনি বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে লাঠিজাতীয় কিছুর সঙ্গে একটি ফোনের ক্যামেরার দিকটা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। তৎক্ষণাৎ চিৎকার করে মেসে যারা ছিলেন, তাদের নিয়ে ছাদে কেউ আছে কিনা খুঁজতে যান। এক পর্যায়ে তারা বুঝতে পারেন, সিঁড়িঘরে পানির ট্যাঙ্কের পেছনে কেউ লুকিয়ে আছে। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর সেখান থেকে বাড়িওয়ালার ছেলে তুহিন সরকার বের হয়ে আসে এবং পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে। এ সময় তার পরিবারকে জানানো হলেও তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী জানান, তুহিন চলে যাওয়ার পর ট্যাঙ্কের পাশে দড়ি বাঁধাসহ একটি লাঠি খুঁজে পান তারা। ওই ঘটনার পর থেকে মেসে অবস্থানরত মেয়েরা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে রয়েছেন। নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান মেসে অবস্থানরত ছাত্রীরা।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন বলেন, বুধবার ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যেহেতু বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের ঘটনা, তাই পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ ছাড়া ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিবেচনা করে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি লোকমান হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। ওই ছেলের অভিভাবক ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে থানায় ডেকে এনেছি। তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ওই ছাত্রীও লিখিত অভিযোগ দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।