মালদ্বীপের প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন কমার্শিয়াল ব্যাংক অব মালদ্বীপ থেকে সরাসরি দেশে থাকা প্রিয়জনের বিকাশ অ্যাকাউন্টে তাৎক্ষণিক রেমিটেন্স পাঠাতে পারবেন। এ সেবা চালুর লক্ষ্যে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসি বাংলাদেশ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব মালদ্বীপ এবং বিকাশের মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে আরও বিস্তৃত হলো নিরাপদে ও বৈধ উপায়ে তাত্ক্ষণিক রেমিটেন্স পাঠানোর সুবিধা।
‘বাংলা ই-রেমিট’ নামের এ প্ল্যাটফর্ম চালুর মাধ্যমে গতকাল রোববার কমার্শিয়াল ব্যাংক অফ সিলন পিএলসি বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয়ে এ সেবার উদ্বোধন করা হয়। ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে এই সেবা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। মালদ্বীপে নিয়োজিত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ এবং বাংলাদেশে নিয়োজিত মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামিরও এ সময় ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসির গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর সানাত মানাতুঙ্গা, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব মালদ্বীপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডিলান রাজাপাকসে, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসি বাংলাদেশের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নাজিথ মিওয়ানাগে, বিকাশ লিমিটেডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার কামাল কাদীরসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার মালদ্বীপে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সফর ও মালদ্বীপ থেকে বাংলাদেশে বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানোর বিষয়ে তার মত ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে অভিবাসীরা এখন দেশে থাকা প্রিয়জনকে সহজে টাকা পাঠাতে পারবেন। আমি আনন্দিত যে ‘বাংলা ই-রেমিট’-এর মাধ্যমে খুব অল্প সময়ের মধ্যে মালদ্বীপ প্রবাসীদের জন্য এই তাৎক্ষণিক রেমিটেন্স ট্রান্সফার সুবিধা চালু করা হয়েছে। বিকাশ বাংলাদেশে তার বৃহত্তম ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষকে সংযুক্ত করছে। আমার বিশ্বাস, প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ব্যাংকের এ যৌথ উদ্যোগ পুরো ইন্ডাস্ট্রিকেই উপকৃত করবে। বৈধ পথে রেমিটেন্স আনা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি ও সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধাদের জন্য সহজ পদ্ধতি তৈরি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি, যাতে তারা তাদের প্রিয়জনদেরকে টাকা পাঠাতে পারেন মূল্যবান সময় নষ্ট না করেই। আমি নিশ্চিত, নতুন এই উদ্যোগ আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধাদের বৈথ পথে, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত করবে।
বাংলাদেশে মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামির বলেন, দুই দেশের জন্যই এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। বাংলাদেশ সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক দু’টি ও বিকাশের এই যৌথ উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। কারণ, এর ফলে প্রবাসীদের দেশে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া অনেক সহজ হবে।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৯০টির বেশি দেশ থেকে ৮০টি মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান (এমটিও)-এর মাধ্যমে দেশের ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যংকে নিষ্পত্তি হয়ে প্রবাসীদের রেমিটেন্স আসছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি বিকাশ অ্যাকাউন্টে।
কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসি বাংলাদেশ একটি স্বনামধন্য বিদেশি ব্যাংক যা বাংলাদেশের বেশিরভাগ দূতাবাসে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে আসছে। ব্যাংকটি ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে টানা ১২ বছর CRISL থেকে ক্রেডিট রেটিং ‘AAA’ অর্জন করেছে। উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, গ্লোবাল ইকোনমিক্স লিমিটেড ম্যাগাজিন-UK ও ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ম্যাগাজিন- UK প্রদত্ত ‘বেস্ট ফরেইন ব্যাংক ইন বাংলাদেশ’ সম্মাননা, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ম্যাগাজিন-UAE প্রদত্ত ‘মোস্ট সাসটেইনেবল ব্যাংক ইন বাংলাদেশ’ সম্মাননা, গ্লোবাল বিজনেস রিভিউ ম্যাগাজিন-UAE প্রদত্ত ‘বেস্ট কর্পোরেট ব্যাংক বাংলাদেশ’ পুরস্কার এবং ওয়ার্ল্ড বিজনেস আউটলুক-সিঙ্গাপুর কর্তৃক ‘মোস্ট রিকমেন্ডেড ফরেইন ব্যাংক ইন বাংলাদেশ’ স্বীকৃতি।