বিপ্লবী ‘যুগান্তর’ দলের প্রধান এবং ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের প্রধান সংগঠক মাস্টারদা সূর্যসেনের আজ মৃত্যুবার্ষিকী । তাঁর জন্ম ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়া গ্রামে। পুরো নাম সূর্যকুমার সেন। ডাক নাম কালু। বাবা রাজমনি সেন এবং মা শশীবালা দেবী।
সূর্যসেন যখন নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ের ছাত্র তখন বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে বাংলায় স্বদেশী আন্দোলন শুরু হয়।
ক্রমে তাঁর দলই চট্টগ্রামে সক্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের ছাত্ররা ক্লাসবর্জনসহ সভা-সমাবেশ করে। সভায় সূর্যসেন তাঁর বক্তৃতায় ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হন।
১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামের জেলা কংগ্রেসের সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। এতে সূর্যসেন সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। একই বছর ১৩ সেপ্টেম্বর লাহোর জেলে একটানা ৬৩ দিন অনশন করে বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মারা যান। বিপ্লবীরা স্বাধীনতার জন্য প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করার শপথ নেন। এর জন্য তাঁরা ‘মৃত্যুর কর্মসূচি’ ঘোষণা করেন।
সূর্যসেনের নেতৃত্বে পুলিশের অস্ত্রাগার দখলের পর অস্ত্র ও গুলি সংগৃহীত হয়। সূর্যসেন পাহাড়ে আত্মগোপন করেন। । ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে একদল গোর্খা সৈন্য গোপন স্থানটি ঘিরে ফেলে। সৈন্যবেষ্টনী ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সূর্যসেন ধরা পড়েন।
‘যুগান্তর’ দলের তারকেশ্বর দস্তিদার সূর্যসেনকে চট্টগ্রাম জেল থেকে ছিনিয়ে নেয়ার প্রস্ততি নেন। কিন্তু পরিকল্পনাটি ব্যর্থ হয়। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে সূর্যসেন, তারকেশ্বর দস্তিদার এবং কল্পনা দত্তের বিশেষ আদালতে বিচার হয়। ১৪ আগস্ট সূর্যসেন ও তারেকেশ্বর দস্তিদারের ফাঁসির রায় হয় এবং কল্পনা দত্তের যাবজ্জীবন কারাদন্ডহয়। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের এই দিন চট্টগ্রাম কারাগারে উভয়ের ফাঁসি কার্যকর হয়।