সাংবাদিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন গণফোরামের সভাপতি ও আইনজ্ঞ ড. কামাল হোসেন।
গতকাল বুধবার (১৩ জানুয়ারি) এক শোকবার্তায় ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারি দেশের ও সারা পৃথিবীর জন্য কত ভয়াবহ ক্ষতির কারণ, তা মিজানুর রহমান খানের অকালমৃত্যুর মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘মিজানের মত একজন প্রাণবন্ত মানুষের বিয়োগের শোক বহন করতে হবে, আমি তা কখনো ভাবিনি। অথচ আজ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ও স্তরের মানুষ তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ।
বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের অন্যতম ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘মিজানের সঙ্গে আমার স্নেহের ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক ছিল। তিনি সংবিধান, আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে গভীর অনুসন্ধিৎসু ছিলেন, যা পেশাগত দায়িত্বে গণ্ডি পেরিয়ে অতিক্রম করে তাাঁর ধ্যানজ্ঞানে পরিণত হয়েছিল।
একজন সাংবাদিক সাধারণত একটি প্রতিবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সন্তুষ্ট থাকেন। কিন্তু তাঁর প্রতিটা লেখার বিষয়বস্তুর গভীরে গিয়ে নিরবচ্ছিন্ন অধ্যাবসায়ের সঙ্গে এতটাই নিমগ্ন হতেন যে ওই বিষয়ে তার পড়াশোনা ও জ্ঞান ঈর্ষণীয় ব্যাপ্তি অর্জন করত। সাংবিধানিক আইনের গতি প্রকৃতি নিয়ে তাঁর এ জ্ঞান থেকে আমরা সকলেই উপকৃত হয়েছি। কোন কোন বিষয়ে আমি তাঁর সাহায্য চেয়েছি এবং তিনি গভীর আগ্রহের সঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে আমাদেরকে তথ্য উপাত্ত ও তাঁর নিজস্ব বিশ্লেষণ দিয়ে সহায়তা করেছেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন,‘আমার একটি বইয়ের অনুবাদ এর দায়িত্ব তাঁকে দিয়েছিলাম অপরিমেয় যত্নের সাথে তিনি তা সম্পন্ন করেন। অনুবাদ যাতে যথাযথ হয় তার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অসীম ধৈর্যের সাথে তাঁর কাজ করে যান, যা তাঁর নিষ্ঠার সাক্ষ্য দেয়। সাংবাদিকতা, সংবিধান এবং আইনবিষয়ক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে মিজানের মৃত্যু এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমরা তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করব এবং তাঁকে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করব। গণফোরাম সভাপতি মিজানুর রহমানের আক্তার শান্তি কামনা করেন এবং তার স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
গণ বিশ্ববিদ্যালয় শোক সভা
গতকাল সাভারে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন মিলনায়তনে মিজানুর রহমান স্মরণে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানকে সংবিধান আইনবিষয়ক সাংবাদিকতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লায়লা পারভীন বানু। শোকসভায় শিক্ষকরা বলেন সদাহাস্যোজ্জ্বল স্বল্পভাষী এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে গণ বিশ্ববিদ্যালয় এক জ্ঞানী শিক্ষক ও সুহ্রদকে হারাল।
সভায় বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মনসুরা মুসা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন হাসিনা অনুপমা আজহারী, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস অনুষদের ডিন মোতাহার হোসেন মন্ডল, রেজিস্টার এস তাসাদ্দেক আহমেদ, আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. রফিকুল আলম এবং গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ
মিজানুর রহমান খান গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান।
আরও শোক
মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, বাংলাদেশের উপাচার্য এইচ এম জহিরুল হক, আর্টিকেল নাইনটিনের বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল।