মির্জা ফখরুল মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় তিনি বলেন, ‘চিকিসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো পুরোটাই আদালতের বিষয়। এখানে রাজনীতির সুযোগ নেই।’
বুধবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি। এ সময় মঙ্গলবার নয়াপল্টনস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান আইনমন্ত্রী। সাংবাদিকদের সামনে নির্বাহী আদেশের বিধান অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ নেই বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
আইনমন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যম সূত্রে আমি জানতে পারলাম, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকালের (মঙ্গলবার) সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আইনমন্ত্রী একসময় বলেছিলেন, (খালেদা জিয়ার) দণ্ড স্থগিত করে বাসায় থাকতে দেয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই। এটা পারেন শুধু আদালত। অথচ তার কিছুদিন পরই সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশনেত্রী (খালেদা জিয়া) বাসায় এসেছিলেন।’
মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য সর্বৈব মিথ্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কারণ এমন কথা আমি কোথাও কখনও বলিনি। আমার বক্তব্য সবসময় রেকর্ড করা থাকে বলে ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত কী কথা বলেছি, সেগুলো চেক করে দেখেছি। সেখানে কোথাও (এ কথা) নেই। আমি একজন আইনজীবী। আমি বাংলাদেশের সংবিধান ও ফৌজদারি কার্যবিধি জানি। তাই আমার পক্ষে এ কথা বলা সম্ভব নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল শেখ হাসিনার সঙ্গে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার তুলনা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনা যখন চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছিলেন, তিনি তখন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বা কয়েদি ছিলেন না। তিনি তখন সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চাপিয়ে দেয়া সবক’টি মামলায় নিঃশর্ত জামিনে ছিলেন।’
আইনমন্ত্রীর পাশে ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ওই সময় শেখ হাসিনার আইনজীবীদের একজন ছিলেন তিনি।
ব্যারিস্টার তাপসের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘তিনি (ব্যারিস্টার তাপস) পরিষ্কারভাবে আমাকে জানিয়েছেন, এই সব মামলায় জামিন (বেল বন্ড) নেয়ার পরই বঙ্গবন্ধুকন্যা মুক্ত হয়েছিলেন। এছাড়া, তাকে নিঃশর্ত জামিন দেয়া হয়েছিল। অর্থাৎ তার জামিনে কোনো শর্ত দেয়া হয়নি। তার বিদেশে যাওয়ার বিষয়েও কোনো বাধানিষেধ ছিল না। তাই তার বিদেশে যাওয়ার সময় কোনো অনুমতি বা নির্বাহী আদেশের প্রয়োজন হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) আইন মেনেই বিদেশে গিয়েছিলেন, আইন মেনেই দেশে ফিরেছিলেন। বরং ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে বিএনপি সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ এবং তার পরিচালিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই সময় অবৈধভাবে শেখ হাসিনাকে বিদেশ থাকা অবস্থায় দেশে ফিরতে দেয়নি। শেখ হাসিনা সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে, সংগ্রাম করে দেশে ফিরে আসেন। এবং দেশে ফিরে আসার পর তাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়।’