দৈনিক শিক্ষাডটকম, কেরানীগঞ্জ : অপহরণের শিকার হওয়া একমাত্র ছেলে তাওহীদ হোসেনকে (১০) ফিরে পেতে মুক্তিপণ দিয়েছিলেন তিন লাখ টাকা। তবে ছেলেকে পাননি, অপহরণের ৩৬ ঘণ্টা পরে পেয়েছেন তার লাশ।
আজ সোমবার ভোরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছন থেকে তাওহীদ হোসেনের লাশ উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সে আব্দুল্লাহপুর রসুলপুর মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। ময়না তদন্তের জন্য তার মরদেহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তাওহীদের মা তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘গত শনিবার রাত ৯টায় আব্দুল্লাহপুর মধ্যপাড়া থেকে আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়। আমার বাসার পাশে একটি মোবাইল ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। সেই মোবাইলে কল করে তারা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।’
তিনি বলেন, ‘ছেলেকে ফিরে পেতে তিন লাখ টাকা দিতে রাজি হই। তবে তারা ১০ লাখের কমে আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেবে না বলে জানায়। পরে অপহরণকারী মকবুল হোসেন তিন লাখ টাকা নিয়ে মাওয়া সড়কের রাজেন্দ্রপুর ওভার ব্রিজের ওপরে একটি পিলারের নিচে রেখে যেতে বলে।’
অপহরণের ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করা হয়। এ ছাড়া এই ঘটনা র্যাব সদস্যদের জানানো হয়। ওভার ব্রিজের নিচ থেকে টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে র্যাব সদস্যরা। পরে মকবুল র্যাবকে জানান, তাওহীদের লাশ আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে রাখা আছে।
জানা গেছে, গ্রেফতার মকবুল হোসেনের বাড়ি কেরানীগঞ্জ মডেল থানার রোহিতপুর ইউনিয়নের লাকিরচর এলাকায়। তিনি কয়েকমাস ধরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর মধ্যপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন।
তাওহীদ হোসেনের মামা মো. মহসিন হোসেন বলেন, ‘আমার বোন-জামাই উজ্জ্বল হোসেন সৌদি প্রবাসী। আমার ভাগ্নে মাদরাসাশিক্ষার্থী। তার বাবা সৌদি প্রবাসী হওয়ায় তাকে টার্গেট করে অপহরণকারীরা।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহেদ ইকবাল বলেন, ‘তিন লাখ টাকা অপহরণকারীকে দিয়েও তাওহীদকে জীবিত পাওয়া গেল না। তাওহীদ হত্যার খবরে এলাকার শোকাচ্ছন্ন মানুষ ক্ষোভে ফুসছেন। অভিযুক্ত মকবুলের সঙ্গে আরও যারা জড়িত, তাদেরকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছে এলাকাবাসী।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ মাহাবুব রহমান বলেন, ‘অপহরণের ঘটনার পর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করেছে র্যাব সদস্যরা। লাশের ময়না তদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’