শেষকৃত্যের জন্য আনা হয় শ্মশানে। কিন্তু শরীর গরম এবং পার্লস পাওয়ায় স্বজনরা মনে করেন তিনি বেঁচে আছেন। নেয়া হয় হাসপাতালে, চিকিৎসক মৃত্য ঘোষণা করেন। আবারও আনা হয় শ্মশানে। তখনও শরীর গরম। বেঁচে আছেন, না মরে গেছেন এ নিয়ে সৃষ্টি হয় ধুম্রজাল। শ্মশানেই আসেন একাধিক সরকারি চিকিৎসক।
জানা যায়, ঝালকাঠি শহরের পোস্ট অফিস সড়কের সাধনা রানী রায় (৯০)। এই নারী দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধ্যক্য জনিতে রোগে সয্যাশায়ী ছিলেন। শনিবার সকালে তিনি মারা গেছেন ভেবে স্বজনরা শেষকৃত্যের জন্য পৌর শ্মশানে নিয়ে আসেন। কিন্তু সেখানে আনার পর ওই বৃদ্ধার শরীর উষ্ণ থাকায় এবং পার্লস অক্সিমিটারে পার্লস সচল থাকায় স্বজনদের সন্দেহ হয়। নেয়া হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন ওই বৃদ্ধ নারীকে। পুনরায় তাকে আনা হয় পৌর শ্মশানে। কিন্তু তখনও একই অবস্থা। শরীর উষ্ণ আর পার্লস অক্সিমিটারে পাওয়া যায় হুদস্পন্দন। মুহুর্তের মধ্যে পুরে শহরে ছড়িয়ে পড়ে শ্মশানে মৃত মানুষের বেঁচে ওঠার গল্প। স্বজনরাও শেষকৃত্যের আয়োজন স্থগীত করেন। খবর পয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে আসেন পৌর শ্মশানে। তিন সদস্যের বোর্ড বসিয়ে করা হয় ইসিজিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা। শেষমেষ ওই বৃদ্ধ নারীকে মৃত ঘোষণা করা হয় চিকিৎসক দল।
মৃতের জামাতা বাবুল কর্মকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলন, 'হাসপাতাল থেকে তার শাশুরিকে আবারো শশ্মানে নিয়া যায় স্বজনরা। কিন্তু মৃত ব্যক্তি জীবিত হযেছেন এমন খবর শহরে ছড়িয়ে পরলে আত্মীয় স্বজন ছাড়াও কৌতুহলি মানুষ শশ্মানে ভীড় জমায়।
ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: টিএম মেহেদী হাসান বলেন, মানুষের মৃত্যুর পরও ৪ থেকে ৫ ঘন্টা শরীর উষ্ণ থাকতে পারে। এক্ষেত্রে ইসিজির মাধ্যমেই মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে হয়।
সাধনা রানীর মৃত্যু নিশ্চিত হতে সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম জহিরুল ইসলাম, সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যল অফিসার (আরএমও) ডা. মেহেদী হাসান সানি এবং কনসালট্যান ডা. আবুয়াল হাসান ছুটে যান শশ্মানঘাটে। সেখানে তারা সাধনা রানীর পালস এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করেন। তারাও উপস্থিত সকলকে সাধনা রানী মৃত বলে জানিয়ে দেয়। গনমাধ্যম কর্মীদের সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম জহিরুল ইসলাম বলেন, 'মৃত্যুর পর ৩ থেকে ৫ ঘন্টা মহদেহ গরম থাকতে পারে, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে সাধনা রানী মৃত।
শ্মশানে চিকিৎসা বিভাগের জরুরি বোর্ড বসিয়ে বৃদ্ধ নারীকে মৃত ঘোষণার পর অবশেষ স্বজনরা শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।