ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের (৫৩) মৃত্যুর ঘটনা লিখিতভাবে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে আগামী বুধবার (৩ মার্চ) রাষ্ট্রপক্ষকে শুনানি করার জন্য বলেছেন হাইকোর্টে।
সোমবার (১মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন। এ মামলার আসামি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরসহ মোশতাক আহমেদের জামিন আবেদন শুনানির সময় এ আদেশ দেন।
শুনানিতে আদালতে আবেদনকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, ‘তিনি (মুশতাক আহমেদ) মারা গেছেন। তখন আদালত বলেন, ‘সেটি আপনি হলফনামা আকারে আদালতকে জানান এর পর জামিন আবেদনটি অ্যাবেট (বাদ) করা হবে।’
জবাবে ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া জানান, ২ মার্চের মধ্যে তিনি হলফনামা আকারে জমা দিতে পারবেন।
এরপর আদালতে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি করেন জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। তার শুনানির পর আদালত এ বিষয়ে বুধবার (৩ মার্চ) জবাব দেয়ার জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে বলেন। একইসঙ্গে ওইদিন তার জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য দিন রেখেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৮টার দিকে মুশতাক আহমেকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
২০২০ সালের ৫ মে র্যাব-৩, সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মিনহাজসহ ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এছাড়া আরও অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় গত ১৩ জানুয়ারি কাটুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে রমনা থানা পুলিশ। যেখানে জুলকারনাইন খান ওরফে সামিসহ অন্য আট জনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছে। যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। ওই পেজের অ্যাডমিন শায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ সমাচার, স্বপন ওয়াহিদ, মোস্তাক আহম্মেদ নামীয় ফেসবুক আইডিসহ পাঁচজন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে ফেসবুক পেজটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করছে।
আহমেদ কবীর কিশোর, তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন, শাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিং’এর প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, তাদের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোনে ‘আমি কিশোর’ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনাভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগে বলা হয়।