মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ খরচ নিয়ে পরিবারের শঙ্কা

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি |

দরিদ্রতাকে জয় করে রিক্সাচালকের ছেলে অদম্য মেধাবি আব্দুর রহিম এ বছর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। মেডিকেলে ভর্তির খবরে আব্দুর রহিমের পরিবারের পাশাপাশি গ্রামবাসীর মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। কিন্তু মেডিকেলে পড়ার খরচ নিয়ে পরিবারের মধ্যে শঙ্কা ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। চলতি শিক্ষা বর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ৭২৪ স্থান পেয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন আব্দুর রহিম।

রিক্সাচালক পিতা আব্দুল হালিম বিশ্বাস ও মা জেসমিন খাতুনের মাঝে এ বছল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া অদম্য মেধাবি আব্দুর রহিম।

আব্দুর রহিম যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি গ্রামের আব্দুল হালিম বিশ্বাসের ছেলে। হালিম বিশ্বাস গত ১০ বছর ধরে ঢাকা শহরে রিক্সা চালিয়ে সংসার চালান। দুই ছেলে এবং এক মেয়েসহ ৫ জনের সংসার চলে হালিম বিশ্বাসের রিক্সা চালানো রোজগারের অর্থ দিয়ে। বাড়িতে এলে আব্দুল হালিম বিশ্বাস পরের জমিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। ইতোমধ্যে ভর্তির খরচ বহনসহ মেডিকেলে পড়ার বই কিনে দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন টিপিবি (টিম পজিটিভ বাংলাদেশ)-এর সদস্য সামিয়া হক নামের হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থী।

আব্দুর রহিম বলেন, তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। ছোট ভাই নাহিদ এখনো ছোট। বোন জান্নাতুল ফেরদৌস ঊর্মী স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। বোনটিও মেধাবী। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় ট্যাল্টেপুলে বৃত্তি লাভ করে।

আব্দুর রহিম স্থানীয় গৌরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে  ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে ভর্তি হন একই এলাকার নেংগুড়াহাট স্কুল এন্ড কলেজে। সেখান থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘এ’প্লাস পেয়ে বাবার রিক্সা চালানোর সুবাদে ঢাকার বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)-এর সদর দপ্তরে অবস্থিত বীরশেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজে ভর্তি হন। একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় ১৫৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন আব্দুর রহিম। এরপর অধ্যক্ষ লেঃ কর্ণেল মোল্লা মেসবাহউদ্দীন আহমেদের নজরে পড়েন আব্দুর রহিম। কলেজের অধ্যক্ষ স্যারের সহযোগিতায় কলেজের বই-পত্র কিনে দেয়াসহ বেতন মওকুপ করা হয়। আব্দুর রহিমকে নিজ সন্তানের মত দেখতেন অধ্যক্ষ লেঃ কর্ণেল মেসবাহদ্দীন। এ কলেজ থেকে ‘এ’প্লাস পান আব্দুর রহিম।

আব্দুর রহিমের মা জেসমিন খাতুন বলেন, ২ শতাংশের ভিটেবাড়ি ও মাঠে দুই কাঠা জমি ছাড়া কিছুই নেই। শুনেছি ডাক্তারি পড়তে অনেক টাকা-পয়সা খরচ হয়, ছেলের লেখা-পড়ার খরচ নিয়ে শঙ্কায় আছি। এ কারণে ছেলের লেখাপড়ার জন্য কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ করবেন বলে জানান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045220851898193