স্কুলের ছাত্রী না হলেও নিজের মেয়েকে ছাত্রী দেখিয়ে অবৈধভাবে উপবৃত্তির টাকা তোলা প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন কুমার রায়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করেছে নীলফামারীর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। কাঞ্চন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার দক্ষিণ সিদ্ধেশ্বরী বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার মেয়ে প্রীতিলতা একটি প্রাইভেট স্কুলে পড়াশোনা করলেও তাকে দক্ষিণ সিদ্ধেশ্বরী বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী দেখিয়ে তার নামে উপবৃত্তির টাকা তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ ছিলো প্রধান শিক্ষক কাঞ্চনের বিরুদ্ধে।
দেশের শিক্ষা বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিক দৈনিক শিক্ষাডটকম ও শিক্ষা বিষয়ক জাতীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তা তদন্ত হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে উপবৃত্তি বাবদ মেয়ের নামে তোলা সব টাকা সরকারি কোষগারে জমা দিতে তাকে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এম এ শাহজাহান সিদ্দিক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, প্রধান শিক্ষকের মেয়ে প্রীতিলাতা পড়েন একটি প্রাইভেট এক স্কুলে। প্রথম শ্রেণি থেকে বর্তমানে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সেখানেই পড়ছেন। তবে তার বাবা কাঞ্চন যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওই স্কুলের উপবৃত্তির তালিকায় আছে তার নাম। স্কুলের হাজিরা খাতা নিয়মিত উপস্থিতি দেখিয়ে নিজের মেয়ে প্রীতিলতার নামেই উপবৃত্তি তোলেন প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন কুমার রায়। বাবা সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক হওয়ায় নিয়মের তোয়াক্কা না করে জালিয়াতি করে নিজের মেয়েকে স্কুলের শিক্ষার্থী বানিয়ে উপবৃত্তির টাকা নিজের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে তুলে নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন।
আরো পড়ুন : স্কুলের শিক্ষার্থী না হলেও মেয়ের নামে উপবৃত্তি তোলেন প্রধান শিক্ষক
এ নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর ‘স্কুলের শিক্ষার্থী না হলেও মেয়ের নামে উপবৃত্তি তোলেন প্রধান শিক্ষক’ শিরোনামে দৈনিক শিক্ষাডটকমে এবং ৬ সেপ্টেম্বর দৈনিক আমাদের বার্তায় সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত শুরু করে উপজেলা শিক্ষা অফিস।
তদন্তে অভিযোগের বিষয়টি প্রমাণিত পাওয়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার শরিফা আকতার। প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিভাগীয় মামলা গ্রহণের আগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। তবে প্রধান শিক্ষকের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় বিভাগীয় মামলা রুজু করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।জানতে চাইলে নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এম এ শাহজাহান সিদ্দিক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পাওয়ায় ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে এবং মেয়ের নামে উত্তোলন করা উপবৃত্তির সব টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে।