আলোচনা সভা, যশোর শহরের বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা কর্মসূচিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
যবিপ্রবির মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় রোববার সূর্যোদয়ক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে। এরপর সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। সকাল সোয়া ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের গ্যালারিতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইকবাল কবীর জাহিদ।
আলোচনা সভায় অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। কিন্তু বিভিন্ন রাজনতৈকি বাঁক বদলের কারণে সেই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বারবার হোঁচট খেয়েছে। কিন্তু ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের পর বাংলাদেশের উন্নয়ন যদি দেখি, তাহলে দেখবো দেশ তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে। যে বাংলাদেশকে এক সময় বলা হতো, তলাবিহীন ঝুঁড়ি, সেই বাংলাদেশ এখন আর নেই। বাংলাদেশের মানুষ এখন স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে।
যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল মজিদ আলোচনা সভায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশকে স্বাধীন করার স্বপ্ন দেখেছিলেন বলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাস্তবায়ন হচ্ছে। তাঁর হাতকে আমাদের আরো শক্তিশালী করতে হবে।
যবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আলম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব, এ্যগ্রো প্রডাক্ট টেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, উপ-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ এমদাদুল হকসহ অনেকে।
আলোচনা সভায় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান, দপ্তরপ্রধান, শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ।
পরে সকাল সাড়ে ৯টায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে যবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ যশোর শহরের মণিহার অবস্থিত বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। একইসঙ্গে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, সাংবাদিক সমিতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
এর আগে সকাল ৯টায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন যবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ। একইভাবে যবিপ্রবির শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক ও বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।