যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে নতুন সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাংলাদেশিসহ অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশী। দেশটির প্রচলিত আইন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে সুবিধা ছিল, তা বাতিলের পরিকল্পনা চলছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন নির্বাচনে জয়ী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এই বিধানটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। তার প্রচারাভিযানের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিশুদের স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্বের বিধান বাতিল হবে। পরিবর্তে শুধু যাদের পিতা বা মাতার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব বা বৈধ বসবাসের অনুমতি রয়েছে, তাদেরই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
ওয়েবসাইটে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্ম নেওয়া শিশুর নাগরিকত্ব পেতে হলে তার পিতা বা মাতার কোনো একজনের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা বৈধ বসবাসের অনুমতি থাকা আবশ্যক। এই নির্দেশনা দ্রুতই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোতে পাঠানো হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এই নির্দেশনা কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনজীবীরা ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে মার্কিন সংবিধানবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন। অভিবাসন আইনজীবী গ্রেগ সিসকাইন্ড বলেন, এটি মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর লঙ্ঘন, তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০২২ এর শুমারি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৩৩ কোটি ৪৯ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বৈধ ও অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন, যাদের মধ্যে লাখ লাখ বাংলাদেশিও আছেন। মার্কিন নাগরিকত্ব ও গ্রিনকার্ড অর্জনের লক্ষ্যে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়াটি অনেক অভিবাসীই সহজ উপায় হিসেবে ব্যবহার করেন। যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিশুরা নাগরিকত্ব পাওয়ায় তাদের পিতামাতা বৈধভাবে সেখানে বসবাসের অনুমতি পেয়ে থাকেন এবং ১৮ বছর পর তাদেরও নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ সহজ হয়ে যায়।