যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি ছাত্রের মৃত্যু মানবাধিকার লঙ্ঘন : তথ্যমন্ত্রী

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |
যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সৈয়দ ফয়সালের মৃত্যুকে অত্যন্ত অনভিপ্রেত, দুঃখজনক এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রেও যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এই হত্যাকাণ্ড।
 
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
 
মন্ত্রী বলেন, আমি পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি ছাত্রের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারকে সাসপেন্ড করেছে, তদন্ত চলছে। আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা এ ঘটনার জন্য দোষী, তাদের বিচার হবে। 
 
হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। আমাদের দেশে যেন মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়, কেউ লঙ্ঘন না করে, সেদিকে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। বিশ্বময় কোথাও যেন মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয় সেটিও আমরা চাই।
 
আদালত স্বাধীন বলেই মুক্তি পেলেন ফখরুল-আব্বাস
 
বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার জামিনে মুক্তি প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম এবং মির্জা আব্বাস যে মুক্তি পেয়েছেন এতেই প্রমাণ হয়েছে বাংলাদেশের আইন-আদালত স্বাধীন। কারণ সরকার তাকে গ্রেফতার করেছিল, তারা আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি লাভ করেছেন। দেশের আইন-আদালত অত্যন্ত স্বাধীনভাবে কাজ করে, সেই কারণেই তারা মুক্তি লাভ করেছেন। আমি তাদের দুজনের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘ আয়ু কামনা করি। তারা যাতে সুস্বাস্থ্য বজায় রেখে সরকারের বিরোধিতা করতে পারে, সেটিই আমি কামনা করি।
 
১১ জানুয়ারি: বিশৃঙ্খলা প্রতিহতে জনগণের সঙ্গে থাকবে আওয়ামী লীগ
 
বুধবার (১১ জানুয়ার বিএনপির দেশব্যাপী গণঅবস্থান কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি বা কোনো বিরোধীদল যদি শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচি পালন করে সেক্ষেত্রে সরকার সবসময় সহযোগিতা করেছে এবং করবে। কিন্তু আমরা সবসময় দেখেছি তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির কথা বলে সেখানে অশান্তি তৈরি করে এবং জনগণের সম্পত্তি বিনষ্ট করে।
 
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঘিরেও তারা দেশে অশান্তি তৈরি করেছিল। তারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে এবং জনগণের শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতি বিনষ্ট করেছে। ১১ তারিখেও আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখবো, সতর্ক পাহারায় থাকবো, আমাদের দল সতর্ক পাহারায় থাকবে যাতে তারা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। যদি করার চেষ্টা করা হয় জনগণ প্রতিহত করবে, আমাদের দল জনগণের সঙ্গে থাকবে।
 
এর আগে তথ্য ভবন মিলনায়তনে ৬ থেকে ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফররত ৩৪ ভারতীয় সাংবাদিকের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে ভারত শুধু তাদের সীমান্ত খুলে দেয়নি, ঘরের দুয়ারই খুলে দেয়নি, মনের দুয়ারও খুলে দিয়েছিল। নিজে না খেয়ে বা কম খেয়ে এ দেশ থেকে যাওয়া শরণার্থীদের তারা খাইয়েছে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন সেটি আমাদের দেশের মানুষ মনে রাখবে।
 
তিনি বলেন, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দুই দেশের মৈত্রী রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। তাদের ভূমিকার জন্য আমরা বাংলাদেশিরা, এদেশের সমস্ত নাগরিক, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আমরা ভারতবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।
 
কলকাতার ২৫ জন ও আসামের ৯ জন সাংবাদিকের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারা বাংলাদেশের কিছু অংশ ঘুরে দেখেছেন এবং নিশ্চয়ই বাংলাদেশে যারা ১২-১৪ বছর আগে এসেছিলেন, তারা পার্থক্যটা বুঝতে পেরেছেন। এটিই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।
 
বাংলাদেশকে সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বর্ণনা করে ড. হাছান বলেন, আমাদের দেশে যে সামাজিক সম্প্রীতি, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে সম্প্রীতি, বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের মধ্যে সম্প্রীতি- এটি অনেক দেশের জন্য উদাহরণ। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার।’ আমরা সেটিই লালন করি, বুকে ধারণ করি।
 
তথ্যমন্ত্রী এসময় ভারতীয় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ প্রত্যাবাসনে তিনি ভারতের সহায়তা কামনা করেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতই এখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রয়েছে জানান এবং কোনো গুজব যেন সাম্প্রদায়িক বা সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে সেজন্য সাংবাদিকের সহযোগিতা কামনা করেন।
 
অর্থনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় বলে দেয় এ দেশ থেকে অর্থনৈতিক কারণে কোনো প্রতিবেশী দেশে অনুপ্রবেশ ঘটার কোনো কারণ নেই।
 
এসময় কলকাতা প্রেস ক্লাব সভাপতি স্নেহাশিস সুর বলেন, আজ ১০ জানুয়ারি ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়ের কাছে একটা বিশেষ দিন। কারামুক্তির পর এই দিনেই স্বাধীন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের জাতির পিতা এবং সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের মাটিতেও প্রথম পা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের মাটিতেও প্রথম পা দিয়েছিলেন। আর এই দিনে বাংলাদেশের মাটিতে থাকতে পেরেছি সেৎজন্য আমরা অত্যন্ত গৌরবান্বিত।
 
আসামের আঞ্চলিক সংবাদ টিভি চ্যানেল প্রাগ নিউজের প্রধান সম্পাদক প্রশান্ত রাজগুরু একটি বদলে যাওয়া বাংলাদেশ দেখানোর জন্য মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
 
বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান ভারতীয় সাংবাদিকদের বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার ওপর পাঁচটি গ্রন্থের একটি করে সেট উপহার দেন। মন্ত্রী কলকাতা প্রেস ক্লাব প্রকাশিত ‘অখণ্ড ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে পূর্ববঙ্গের মহিয়সীরা’ গ্রন্থটি গ্রহণ করেন এবং সাংবাদিক সুমন ভটাচার্য সম্পাদিত ‘শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।
 
এসময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003169059753418