এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সারাদেশের ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেননি। এ তালিকায় ৪৪টি কলেজ, ৪টি মাদরাসা এবং ২টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ঢাকা বোর্ডের আটটি, ময়মনসিংহ বোর্ডের তিনটি, দিনাজপুর বোর্ডের ১৩টি, যশোর বোর্ডের ছয়টি, রাজশাহী বোর্ডের নয়টি এবং কুমিল্লা বোর্ডের পাঁচটি সাধারণ ধারার কলেজ রয়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। সাধারণত শূন্যপাস করা এমপিওভুক্ত কলেজের এমপিও স্থগিত করা হয়। তবে এবার তা না-ও হতে পারে। এসব প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়াতে কর্মশালা আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এমন পরিস্থিতিতে শূন্যপাস করা কলেজগুলোর তথ্য সাধারণ ধারার বোর্ডগুলোর কাছে চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মিজানুর রহমান গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সাধারণ ধারার বোর্ডগুলোর কাছে শূন্যপাস করা প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্য চাওয়া হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হননি অর্থাৎ পাসের হার শূন্য সেসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোকে।
এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা আরও বলেন, কি ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছি না। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দেবেন কি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা বোর্ডের কেউ পাস করতে না পারা আট কলেজ হলো- রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার সেন্ট্রাল আইডিয়াল কলেজ, শাহজাহানপুরের ঢাকা অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, মানিকগঞ্জ সদরের আফরোজা রমজান গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার আলোয়া হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাজবাড়ী কালুখালী উপজেলার নূর নেসা কলেজ, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতোইল আইডিয়াল কলেজ, গোপালগঞ্জ সদরের ড. দিলওয়ার হুসাইন মেমোরিয়াল কলেজ এবং কিশোরগঞ্জ সদরের লে. কর্নেল (অব.) করিম ভূইয়া কলেজ।
ময়মনসিংহ বোর্ডের যে তিনটি কলেজে কেউ পাস করতে পারেনি সেগুলো হলো- ময়মনসিংহের ত্রিশালের সিটি রয়েল কলেজ, শেরপুরের ঝিনাইগাতির আলহাজ্ব হাজেরা আক্তারুজ্জামান কলেজ ও নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলারর কলমাকান্দা মহিলা কলেজ।
কেউ পাস করতে না পারা দিনাজপুর বোর্ডের ১৩টি কলেজগুলো হলো- ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের গগর কলেজ, ঠাকুরগাঁও সদরের সালান্দার মহিলা কলেজ, কুড়িগ্রামের রাজারহাটের সিংগার দাররির হাট বি এল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ার আলহাজ্ব তমিজ উদ্দিন কলেজ, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মারায়া মডেল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার নাসিরউদ্দিন কলেজ, কালিগঞ্জ উপজেলার দুহালি এস সি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার চৌরাডাঙ্গী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সোনকা আদর্শ কলেজ, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের নলডাঙ্গা মহিলা কলেজ, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া মহিলা কলেজ, দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর উত্তর লক্ষ্মীপুর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার পীরগঞ্জ কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
যশোর বোর্ডের ছয়টি কলেজে কেউ পাস করেনি। এগুলো হলো- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হাজী নুরুল ইসলাম কলেজ, ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শাইখপাড়া রাহাতুন্নেসা গার্লস স্কুল, যশোরের কেশবপুরের সাউথবেঙ্গল কলেজ, মাগুরা সদরের রাওতারা এইচ এন সেকেন্ডারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শিবরামপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং নড়াইল সদরের গোবরা মহিলা কলেজ।
রাজশাহী বোর্ডের নয়টি কলেজ হলো- বগুড়ার ধুনটের বিশ্বরিগাছা বোহালগাছা মাল্টিলিটারাল কলেজ, নাটোরের সিংড়ার আগপাড়া শেরকোলবন্দর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেরকোল আদর্শ কলেজ, বগুড়ার কাহালুর দূর্গাপুর আইডিয়াল মহিলা কলেজ, নওগাঁর আত্রাইয়ের শিবগঞ্জ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ, রাজশাহীর তানোরের মোহাম্মদপুর মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজ, নাটোর সদরের হয়বতপুর মাল্টিলিটারাল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, জয়পুরহাট সদরের আল হেরা একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সিরাজগঞ্জ সদরের এস বি রেলওয়ে কলোনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
কুমিল্লা বোর্ডের পাঁচটি কলেজে কেউ পাস করেননি। এগুলো হলো- ফেনী সদরের নোবেল কলেজ, গ্রিনল্যান্ড কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের কৃষাননগর আবদুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জিনোদপুর ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং চাঁদপুরের দক্ষিণ মতলবের ড. এম শামসুল হক মডেল কলেজ।
চারটি মাদরাসায় কেউ পাস করেননি। এগুলো হলো, বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মাদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তাফালবাড়িয়া হোসেনিয়া আলিম মাদরাসা, পটুয়াখালী সদরের লোহালিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা ও কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ব্রাহ্মণচর নওগাও আলিম মাদরাসা।
আর শূন্যপাস করা দুই কারিগরি প্রতিষ্ঠান হলো- চাঁপাইনবাবগঞ্জের পার্বতীপুর মহিলা টেকনিক্যাল বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট ও নাটোরের গুরুদাসপুরের নোয়াপুর মোকলেসুর রহমান টেকনোলজি কলেজ।