যৌন কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত সেই প্রধান শিক্ষকই এখন সভাপতি!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

যৌন কেলেংকারিতে জড়িত হয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ হারানোর পর একই স্কুলের পরিচালনা ফাউন্ডেশনের সভাপতি হয়েছেন তিনি। সভাপতি হয়েই রফিকুল নামের একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের  এক শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ম্যানেজ করে এসব অসম্ভবকে সম্ভব করে চলছেন ঢাকার আশুলিয়া এলাকার টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফ। এই স্কুলটি অবৈধভাবে গঠিত একটি ফাউন্ডেশনের নামে পরিচালিত হয়।  যৌন কেলেংকারিতে চাকরিহারা প্রধান শিক্ষক লতিফই এখন ফাউন্ডেশনের সভাপতি  এবং তিনিই এখন একই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগদাতা। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। 

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের এই ডেস্কের শাহীন নামের একজন লতিফকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে। লতিফ বরখাস্ত হলেও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত সব পাসওয়ার্ড ও অন্যান্য যোগাযোগ এখনও লতিফেরই কুক্ষিগত। টাকার বিনিময়ে এতে লতিফকে সহযোগীতা করছে শাহীন। জানতে চাইলে শাহীন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে, স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকরা খুব শিগগিরই বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে এসব বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগ তুলে ধরবেন। 

বিধি বহির্ভূতভাবে ভিন্ন ভিন্ন দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে চাকরি করার অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে লতিফের বিরুদ্ধে। বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। এছাড়া ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার পাঠানো প্রতিবেদনে একই সাথে দুইপদে চাকরির বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে তাকে অব্যাহতি দেয়ার আদেশ জারি করেছে ঢাকা বোর্ড।

বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভুঞা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফের বিরুদ্ধে যে অনৈতিক ভিডিও ক্লিপ পাওয়া গেছে তার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। একজন প্রধান শিক্ষক যদি কোন অনৈতিক কাজে জাড়িয়ে যান এবং সেটি যদি ভিডিও হয়-তাহলে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়াসহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই আবদুল লতিফের প্রতিষ্ঠান প্রধান থাকা যুক্তিসংগত নয়।   

এছাড়া মো. আবদুল লতিফ একই সাথে দু’টি প্রতিষ্ঠানের প্রধান (স্কুল এবং কলেজ) হিসেবে চাকরি করে আসছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিবেদনেও বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তাই প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফকে প্রধান শিক্ষক পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির সভাপতিকে এ আদেশ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। 

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অপর এক চিঠিতে বলা হয়েছে, স্কুলটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদন ছাড়া টাঙ্গাইল রেসিডেনসিয়াল স্কুলের ইআইআইএন নম্বর ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের বাইরে জামগড়া ক্যান্টনমেন্ট, ধামরাই ও ইউসুফ মার্কেট নামে বিভিন্ন স্কুল/ক্যাম্পাস খুলে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপ করে আসছে।  এসব বন্ধ করে বোর্ডকে জানাতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0062251091003418