দৈনিক শিক্ষাডটকম, জাবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন বিভাগের এক সাবেক নারী শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষক পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা করেছেন। সোমবার (১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল বরাবর পাঠানো এক মেইলে অভিযোগপত্রটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেলের প্রধান অধ্যাপক জেবউননেছা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যৌন হয়রানি অভিযোগ করে বলেন, ‘সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহা আমাকে কাউন্সিলিং করানোর নামে যৌন হয়রানি করেছেন। তিনি আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য রেস্টুরেন্টে পা পর্যন্ত ধরতে চেয়েছিলেন। এসব অত্যাচারে কারণে আমি ঠিকমতো ক্লাস পর্যন্ত করতে পারিনি।’
অভিযোগকারী শিক্ষার্থী বলেন, সাজু সাহার জন্য আমি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করতে পারিনি। অন্যসব বিষয়ের চেয়ে ওনার বিরক্ত করা ছিল অন্যতম প্রধান কারণ। স্নাতকের শেষ সেমিস্টার থেকেই আমাকে হয়রানি শুরু করে। যে কারণে শেষ সেমিস্টারে আমার ফলাফলও ভালো হয়নি। আমার কাছে সব তথ্য-প্রমাণ আছে। সময়মতো আমি সব উপস্থাপন করবো।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মার্কেটিং বিভাগের বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনার পর দিন (২৪ মার্চ) ওই শিক্ষার্থীর নামে মিরপুর মডেল থানায় গত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এ শিক্ষক। একপর্যায়ে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও মানহানিকর তথ্য’ প্রচার করায় নিজে বাদী হয়ে ৫০ লাখ টাকার মানহানীর মামলা দায়ের করেন সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহা।
এদিকে ছাত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার বিষয়ে সাজু সাহা বলেন, অভিযোগকারী সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য প্রচার করে আমার মানহানি করেছে। আমি তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করেছি। এর আগে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছিলাম। কিন্তু সে আমার মানহানি করেই যাচ্ছে তাই আদালতে মামলা করেছি। প্রথমে দারুস সালাম থানায় মামলা করতে গেলে সেখান থেকে তারা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।
এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুল হক বলেন, নিপীড়নবিরোধী সেলে পাঠানো অভিযোগপত্রটি আমিও পেয়েছি। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হোক। অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরবর্তীতে বিভাগীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।