রমজানে স্কুলে ক্লাস সৃষ্টিকর্তার বিশেষ রহমত!

মো. সিদ্দিকুর রহমান |

গ্রীষ্মে সাধারণ মানুষ গরমে যখন তৃষ্ণা ও যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে তখন একটুখানি বৃষ্টি ও শীতল পানি তাদের মাঝে সজীবতা এনে দেয়। পাকিস্তান আমল থেকে শিক্ষকতা করে আজ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দেখে আসাছি, গ্রীষ্ম এলেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সূচির সকাল ৮টা থেকে শুরু করে সংক্ষিপ্ত করা হতো। যাতে শিক্ষার্থীদের গ্রীষ্মের দাবদহের তীব্রতার ছোঁয়া কম লাগে। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা অনেক দূর এগিয়ে এসেছে। অথচ আমাদের শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেছে খেলাধুলা ও বিনোদনের সুযোগ।

বর্তমান সময়ে প্রচন্ড গরমের তীব্রতার মাঝে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। করোনায় শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। এ ঘাটতি আমাদের শিক্ষকদের পূরণ করতে হবে। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সবারর মাঝে ছুটির আগের সময়টা অনেকটা মন ছুটে যায় গন্তব্যের পথে। এ অবস্থায় বিদ্যালয় ছুটির আগে ১ম শিফটে ২০ মিনিট, ২য় শিফটে ২০ মিনিট। এ ৪০ মিনিট কোন কার্যকর ঘাটতি পূরণ হয়না। বরং শিশুদের খেলাধুলা ও বিনোদনের অধিকার হরণ করা হয়। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, ডিজিসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনার শিশুকে ‘আন্ডারগার্টেনসহ বিশেষ স্কুলে’ পড়িয়ে খেলাধুলা ও বিনোদনের সুযোগ নিশ্চিত করেছেন। অথচ প্রাথমিকের কর্মকর্তা হয়ে সাধারণ মানুষের সন্তানদের খেলাধুলা ও বিনোদনের সুযোগ হরণ করে চলেছেন। এ বৈষম্য বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশে চলতে দেয়া কতটা যৌক্তিক ভেবে দেখবেন। করোনার শিখন ঘাটতি পূরণে সপ্তাহে বৃহস্পতিবার অর্ধ বেলা স্কুলকে ঘাটতি পূরণ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে পরিপূর্ণ ঘাটতি পূরণ করা যেতে পারে। 

লেখক : মো. সিদ্দিকুর রহমান।

দীর্ঘদিন থেকে দেখে আসছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রমজান মাসে ছুটি থাকে। এ ক্ষেত্রে কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা হয়তো বলবেন, সারাদেশে মেহনতি মানুষসহ অফিস আদালত তো কাজকর্ম চলে। স্কুল-কলেজ চলতে সমস্যা কোথায়? শিক্ষাদান প্রক্রিয়া অন্যান্য সব পেশা থেকে আলাদা। 

রোজা রেখে শিক্ষকদের একাধিক ক্লাস নিতে হলে, তৃষ্ণা, মস্তিষ্কের ওপর চাপ পড়বে। এতে মুসলমানদের ফরজ রোজা রাখার বিঘ্ন হওয়ার সম্ভবনা বিদ্যমান। শিক্ষাদান প্রক্রিয়া সবচেয়ে কঠিন কার্যক্রম লেদা, গেদা, অবুঝ শিশুদের পাঠদান। বাড়িতে অবুঝ শিশুদের হৈ-চৈ, লাফালাফি, দৌড়াদৌড়ি থেকে খানিকটা উপলব্ধি করুন। নচেৎ প্রাথমিকের শিশুদের ক্লাস নিয়ে বাস্তব উপলব্ধি জাগ্রত করে। 

রোজার মাসে হাইস্কুল, কলেজ, ‘আন্ডারগার্টেন’ কিন্ডারগার্টেন, বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় পাঠদানের অফিস আদেশ এখনো দৃশ্যমান হয়নি। মহান সৃষ্টিকর্তার বিশেষ রহমত প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর। নানা বৈষম্য ও অধিকার থেকে বঞ্চিত প্রাথমিকের শিক্ষক ও শিশুরা। এতো কিছুর পরও নিষ্ঠুর সময়সূচি ও রমজান মাসের রোজা রেখে প্রচন্ড, তাপে ক্লাস করার বিশেষ ভাগ্য থেকে বঞ্চিত হয়নাই। প্রার্থনা রইলো নিষ্ঠুর যন্ত্রনার ভাগ্য আল্লাহ তাদের ওপর দিন। সচিবালয়সহ সংশ্লিষ্টদেরও ওপরও এমন রহমত নাযিল হওয়া দরকার। তাদের শিশুদের ও শিক্ষকদের দুঃখ কষ্ট অনুভব করার শক্তি দাও।
 
আল্লাহ সর্বশক্তিমান। জয় বাংলা।

লেখক : মো. সিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ ও সম্পাদকীয় উপদেষ্টা, দৈনিক শিক্ষাডটকম।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051631927490234