শনিবার সকাল থেকেই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) ক্যাম্পাসে নতুন অধ্যক্ষ মাহফুজার রহমানের কক্ষে তালা ঝুলছে। ফলে তিনি তাঁর কার্যালয়ে বসতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে হচ্ছে না কোনো ক্লাস।
শনিবার ( ২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নতুন অধ্যক্ষ পদে পদায়নের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম, শিক্ষার্থী নাজমুল সাদাকত তানজিল, নার্স আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
নতুন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম সমাবেশে বলেন, মাহফুজার রহমানের অধ্যক্ষ পদ বাতিল করে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আনার জোর দাবি জানাচ্ছেন। আশা করছেন, ঊর্ধ্বতন মহল বিষয়টি ভাববে।
অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে গত বৃহস্পতিবার সকালে বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী ও ছাত্র-জনতার ব্যানারে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগানো হয়।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেনের কার্যালয় খোলা থাকলেও তিনি হাসপাতালে রোগী দেখার কাজে গেছেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। প্রশাসনিক দপ্তরগুলো খোলা থাকলেও কেউ কিছু বলতে চাইছেন না। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও নেই বললেই চলে। ক্যাম্পাসে এক-দুজন শিক্ষার্থীকে দেখা গেছে। তবে কোনো ক্লাস হচ্ছে না।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মাহফুজার রহমান বলেন, ‘চিকিৎসকদের একটি পক্ষ আমার কক্ষে তালা দিয়েছে। এ কারণে আমি আমার কার্যালয়ে যেতে পারছি না। আজ সকালে গিয়েছিলাম। কিন্তু কক্ষে তালা থাকায় ফিরে আসতে হয়েছে। বিষয়টি ঢাকায় অবগত করেছি। আশা করি, খুব শিগগির সমস্যার সমাধান হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, সদ্য নিয়োগ পাওয়া মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের নিয়োগ বাতিল করে আবার নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবিতে চিকিৎসকদের একটি পক্ষের আন্দোলন চলছে। এ কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই। তাই হয়তো ক্লাসও হচ্ছে না।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ মকবুল হোসেনের সই করা চিঠিতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে শাহ মো. সরওয়ার জাহানকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। একই কলেজের উপাধ্যক্ষ মাহফুজার রহমানকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়। উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয় সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে।
পরের দিন বুধবার নতুন অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী ও ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের একটি পক্ষ এতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।