রাজধানীর ভাটারায় বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। হাসিবুল হাসান শান্ত (২২) নামে ওই শিক্ষার্থীর বড় ভাইয়ের দাবি, সৎমায়ের সংসারে ‘অত্যাচারিত হয়ে’ তিনি হতাশাগ্রস্ত ছিলেন।
মৃত হাসিবুল নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার ঘোষকামতা গ্রামের ইলেকট্রিক ঠিকাদার আবুল খায়েরের ছেলে। পূর্ব ভাটারায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হোসেন মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে খবর পেয়ে ওই বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে চাদর দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের ওই কর্মকর্তার প্রাথমিক ধারণা, ‘এই তরুণ অভিমান করেই আত্মহত্যা করেছেন।’ এ ছাড়াও অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে বলেও জানান তিনি।
‘হতাশা থেকে ঘটনাটি ঘটতে পারে’ উল্লেখ করে মৃতের বড় ভাই এবি কাইয়ুম জানিয়েছেন, ‘আমার ভাই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তবে সে মৃত্যুর আগে একটি চিরকুট রেখে গেছে। সেখানে লেখা ছিল- বাবা আমাকে ক্ষমা করে দিও, আমি তোমার যোগ্য সন্তান হতে পারলাম না। জীবনে বারবার ব্যর্থ হচ্ছিলাম। আমি একটা মানুষকে বেশি পছন্দ করি। যদি সে চায় তার ভরণপোষণ নেবো। আমি আমার মোবাইলটাকে পছন্দ করি। এইটা ওই মানুষটাকে দিয়ে দিও। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব লিখে গেলেও আমি বলবো, সৎমায়ের অমানুষিক নির্যাতন চলতো সবসময়, আমাদের সহ্য করতে পারতেন না তিনি। আর এসব সহ্য করতে না পেরে বছর খানিক আগে ছোট ভাইকে নিয়ে আমি আলাদা অন্যত্র থাকি। তাকেও বলেছিলাম তুইও চলে আয়। কিন্তু আসেনি, কারণ সে বাবাকে প্রচণ্ড ভালোবাসতো। তার কথা হলো আমি যেখানেই থাকি, সেখানে আমার সঙ্গে বাবা থাকবে। আমি না থাকলে বাবাকে তিনি (সৎমা) মেরে ফেলবেন।’
তবে তার আত্মহত্যা নিয়েও সন্দেহ পোষণ করেন এবি কাইয়ুম। তিনি বলেন, ‘মরদেহটি যেভাবে ঝুলন্ত ছিল, সেখানে দেখা গেছে তার পা মাটিতে লেগে ছিল।’