নওগাঁর ধামইরহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজের গাছ রাতের আধারে কাটার অভিযোগ উঠেছে ওই কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক ও সুধী মহল মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। গাছ কাটার বিষয়টি ধামাচাপা দিতেও মধ্যরাতে গোপন সভা ও বিভিন্ন মহলকে অনুরোধ করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম রাতের বেলায় প্রভাষককে গেটের চাবি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানান, ধামইরহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজের চতুর্দিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। কলেজের ইংরেজি প্রভাষক নাসির উদ্দিন কলেজ বাউন্ডারী সংলগ্ন আকাশমনি, নিম, বনকাঠালসহ বিভিন্ন গাছ কেটে স্থানীয় দুটি স’মিলে বিক্রি করেছেন। বিষয়টি কলেজের অন্যান্য শিক্ষক ও স্থানীয়দের মাঝে জানাজানি হলে ব্যাপক শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে। পুরো ঘটনা টক অব দ্যা উপজেলায় পরিণত হয়।
শনিবার সকালে সরেজমিনে কলেজে গেলে কাটাগাছের শেকড়ের অংশ দেখতে পাওয়া যায়। গাছ কাটার ঘটনা ধামা চাপা দিতে মাটি দিয়ে গাছের গোড়াগুলি ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই সাথে নতুন করে রোপন করা হয়েছে কিছু আম গাছের চারাও। সুকৌশলে গাছ চুরির এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
কলেজের এমএলএসএস আবদুল ওয়াজেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত সপ্তাহে গাছের ডালপালা খড়ি হিসেবে ভ্যানযোগে অন্যত্র নাসির স্যার বিক্রি করতে চাইলে আমি দরদাম করে ১ হাজার টাকায় ৩ ভ্যান খড়ি ক্রয় করেছি।
স্থানীয় স’ মিলের মালিক হারুন অর রশিদ বিদ্যুৎ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিষয়টি আমি প্রথমে জানিনি, পরে শুনেছি। তবে স’ মিলের মিস্ত্রি আবদুল খালেক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত ৬ অক্টোবর ১৫টি আকাশমনি ও ৬টি নিম গাছের টুকরা বিক্রি বাবদ নাসির প্রভাষককে ২ হাজার ৯০০ টাকা দিয়েছি। আকাশ মনি অন্য পাটির কাছে বিক্রয় করা হয়েছে, নিমগাছগুলো মিলে এখনও আছে।’ টিএন্ডটি মোড়স্থ অপর স’ মিলে গাছের সন্ধান নিতে গেলে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্ত প্রভাষক নাসির উদ্দিনের মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষা ডটকমমের পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমি জানিনা ও আমি জড়িত এটি সত্য নয়। তবে ৮-১০ টি গাছ কাটা হয়েছে বলে আমি জানি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলেজ গর্ভনিং বডির সভাপতি প্রকৌশলী ড. ফিজার আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘আমরা গভর্নিং বডির পক্ষ থেকে কলেজের অতি পুরোনো গাছগুলো কাটার অনুমতি চেয়ে সরকারি নির্দেশনার অপক্ষোয় রয়েছি, কিন্তু তার আগে এভাবে গাছ কেটে রাতের আধারে বিক্রি করা অত্যন্ত নিগৃহিত কাজ, আমরা অনতি বিলম্বে জরুরি সভা ডেকে দোষী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।