রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুদ্দিন চৌধুরী সানিনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন দলের একাংশের নেতাকর্মী।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এ ওয়াজেদ মিয়া অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়৷
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মাহমুদুল হাসান মিঠু বলেন, আমরা নিয়মিত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় বসি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকেও সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এনামুলের চায়ের দোকানে বসি। সেখানে ক্যাম্পাস সংলগ্ন বুধপাড়া থেকে কিছু বহিরাগত এসে দেশিয় অস্ত্র, চাকু, চাপাতি নিয়ে শোডাউন দেয় এবং আমাকে হুমকি প্রদান করে। তারা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ে তুই যদি সানিনের রাজনীতি না করিস তাহলে তোকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিয়ে যাবো। পরে জানতে পারি হুমকিদাতা মতিহার থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রানা।
মিঠু বলেন, সানিন বেশ কিছু মাদকাসক্ত, ছিনতাই কারী, চিহ্নিত আসামিদের টাকার বিনিময়ে নিয়ে এসে দলের মধ্যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করছে। আমাদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সরদার রাশেদ আলীকে সানিনের নেতৃত্বে পার্টি অফিসে লাঞ্চিত করা হয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। সদস্য সচিব সানিনের এমন উদ্ধতপূর্ণ আচরণ এবং দলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যা দলের কার্যক্রমের পরিপন্থী। এ কারণে আমরা সানিন এবং বহিরাগত রানাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের ১৩ আগষ্ট শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজের জন্য তার বিরুদ্ধে দলের ১৭ নেতা অনাস্থা প্রকাশ করেন। কিন্তু কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছিল এখন যেহেতু আন্দোলন চলছে যদি পরবর্তীতে কিছু করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজকের ঘটনার পরও যদি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে আমরা গণহারে পদত্যাগ করবো।
সংবাদ সম্মেলনে রাবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব বলেন, বেশ কিছু দিন আগে একটি মামলায় আমি কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে সেখানে সানিন আমাকে মারধর করে। সানিন চিহ্নিত মাদকসেবী৷ তার পুরো সার্কেলটায় মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। তার নেতৃত্ব আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না। আমরা সানিনের পদত্যাগ চাই।
এই সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহীর সমর্থন আছে কি না এবিষয়ে জানতে চাইলে মিঠু বলেন, তিনি এ বিষয়ে অবগত আছেন এবং তার সমর্থন রয়েছে।
এদিকে সমর্থনের বিষয়টি অস্বীকার করে সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, সংবাদ সম্মেলনে আমার কোন সমর্থন নেই। এই সংবাদ সম্মেলন দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী। দলে যদি কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সেটা আমাকে অথবা কেন্দ্রীয় সভাপতি- সাধারণ সম্পাদকে জানাবে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে শামসুদ্দিন চৌধুরী সানিন বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো করেছে এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহবায়ক শফিকুল ইসলাম শফিক, আহসান হাবীব, সম্রাট আব্দুল লতিব, এম এ তাহের রহমান, সদস্য শেখ নূর উদ্দিন আবীর, আবু সাঈদ, আবির হাসান হিমেল, জিয়া সাইবার ফোর্সের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান হাসীব, আমীর আলী হল ছাত্রদল নেতা আর রাফি খান, শামসুজ্জোহা হল ছাত্রদল নেতা জাকির হোসেনসহ ইউনিটের বিভিন্ন হলের নেতৃবৃন্দ।