শিক্ষার্থীদের বাকিতে খেতে দিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ক্যানটিনমালিক মো. শফিকুল ইসলাম। গত পাঁচ-ছয় মাসে শিক্ষার্থীরা ওই ক্যানটিনে খাবার খেয়ে এক লাখ টাকার বেশি বকেয়া করেছেন। এসব শিক্ষার্থীর বেশির ভাগই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
শফিকুল ইসলাম ক্যাম্পাসে শফি ভাই নামে পরিচিত। গতকাল সোমবার আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘তাঁদের
অনেকবার বলেছি, আমার অনেক ঋণ আছে। ঋণ শোধ করতে পারলে শান্তি পাব। বকেয়ার টাকাটা দাও। এই গরিবের দিকে তাকাও। আমি তোমাদের সেবক। আমার বুকে লাথি মেরো না। তোমরা যদি আমাকে ভাত না দাও, তাহলে গুলি করে মেরে ফেলো।’বাকিতে খাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী অভিযোগ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখানকার ছাত্রলীগেরই ছেলেরা বাকি খেয়েছে। নন–পলিটিক্যাল ছেলে অল্প কয়েকটা হতে পারে। এখন আর পারছি না। তোমাদের কত টাকা বাকি দিতে হবে বলো। দেব আমি। কিন্তু তোমরা নিজেদের মতো করে বাকি খেয়ে টাকা পরিশোধ করছ না কেন, এটাই আমার কষ্ট।’
শফিকুল ইসলাম লেখাপড়া জানেন না। তাই কে কত টাকা বাকিতে খেয়েছেন, সেটা বলতে পারেন না। তবে বাকি লিখে রাখার জন্য তাঁর খাতা রয়েছে। তাতে কে কত টাকা বাকিতে খেয়েছেন, তা শিক্ষার্থীরাই লিখে রাখেন। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দিয়ে তাঁর তিনটি খাতা পড়িয়েছেন। এতে গত পাঁচ-ছয় মাসে বাকি পেয়েছেন এক লাখ টাকার বেশি।
শফিকুল ইসলাম বলেন, অনেক দিন ধরে টাকা চেয়েও পাচ্ছেন না। পরে রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে গিয়েছিলেন। তাঁদের পরামর্শে তিনি ক্যানটিনের কয়েক জায়গায় বাকি পরিশোধের অনুরোধ জানিয়ে নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
নোটিশে লেখা রয়েছে, ‘বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না। আমার চলতে কষ্ট হয়, আমাকে ক্যানটিন চালাতে সহযোগিতা করুন। বি.দ্র. বাকির খাতা পরিশোধ করুন। অনুরোধে, শফি ভাই।’
এ বিষয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে। তিনি শফি ভাইকে আশ্বস্ত করেছেন, যেসব শিক্ষার্থী তাঁর কাছ থেকে বাকি খেয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। তিনিই তাঁকে নোটিশ ঝোলানোর পরামর্শ দিয়েছেন।