রাবিতে প্রকাশ্যে ঘুরছে মাদক মামলার আসামি, পুলিশ বলছে পলাতক

রাবি প্রতিনিধি |

গাঁজাসহ প্রক্টোরিয়াল টিমের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ৪ ছাত্রলীগের নেতা। এর মধ্যে পুলিশের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হলেও বাকিরা ঘুরছেন প্রকাশ্যে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার ঘনিষ্ঠ বলেই দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, পরীক্ষার ফর্ম পূরণের কথা বলে দুজন পালিয়ে গেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয়েছে। পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাবি ছাত্রলীগের চার নেতা গাঁজাসহ হাতেনাতে আটক হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল টিমের কাছে। আটক শিক্ষার্থীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ম্যানেজমেন্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান, জিয়া হলের পরিবেশ বিষয়ক উপসম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং শহীদ শামছুজ্জোহা হলের সংস্কৃতিক বিষয়ক উপসম্পাদক আরিফ বিন সিদ্দিক। তবে পরীক্ষার ফর্ম পূরণের কথা বলে রাজু আহমেদ ও সোহানুর রহমান পালিয়ে যান। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশের দায়ের করা মামলায় সাইফুল ইসলাম ও আরিফ বিন সিদ্দিককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সূত্রে জানা গেছে, দুই আসামি হলেই অবস্থান করছেন। প্রক্টোরিয়াল টিমের কাছে গাঁজাসহ ধরা খাওয়ার পর রাজু আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির সঙ্গে দেখা গেছে। এ ছাড়া ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পিকনিকেও তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। 

পলাতক দুই ছাত্রলীগ নেতা

হাতেনাতে ধরা পরার পরেও পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ খান বলেন, ‘প্রশাসন অযুহাত দেখাচ্ছে ফরম ফিলআপের নামে আসামিরা পালিয়ে গেছে। আসলে আসামিদের শক্তি হলো, তাঁরা ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা। এই ঘটনায় যে ধরনের সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছাত্রলীগ তেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এতে অপরাধীরা আস্কারা পাচ্ছেন।’ 

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাখা ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির মদদেই তাঁরা ক্যাম্পাসে মাদকের ব্যবসা করছে। এখন আবার সেই মাদক মামলার আসামিকে নিয়েই ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাঁর শেল্টারের কারণেই পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার পারছে না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর জহুরুল আনিছ, ‘পরীক্ষার ফর্ম পূরণের কথা বলে দুজন পালিয়ে গেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করেছে পুলিশ। পুলিশই তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’

এ নিয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ‘আমরা তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করতে গেলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে। আমরা ভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। আমরা খুব দ্রুতই দুজনকে গ্রেপ্তার করব।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ - dainik shiksha ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো - dainik shiksha দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা - dainik shiksha ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053598880767822