রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থী আবাসিকতা নিশ্চিতের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই কর্মসূচি করেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার আশ্বাসে বেলা ১১টা ১০ মিনিটে কর্মসূচি শেষ করেন।
শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান শাহরিয়ার খন্দকার আলিফ।
শাকিল হোসেন রসায়ন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি কক্ষ পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন। অপরদিকে হাসান শাহরিয়ার খন্দকার আলিফ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি এখনো তার বরাদ্দকৃত সৈয়দ আমীর আলী হলে আবাসিকতা পাননি।
শাকিল হোসেন বলেন, ‘হল প্রশাসনের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে বৈধ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা। হল প্রাধ্যক্ষরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। তারা এটি করতেও চান না, কারণ এটি করলে ছাত্রলীগসহ যারা দখলদারিত্ব চালায় তাদের কর্তৃত্ব বন্ধ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগকে আসন দখল করার সুযোগ দিতেই উনারা হল প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র। তারা প্রতি মাসে বেতন নিচ্ছেন কিন্তু আবাসিকতা দিতে পারছেন না। দীর্ঘদিন আবাসিকতার নোটিশ দেওয়া না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সিট বাণিজ্যের মতো ঘটনা বারবার ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই এই দখলদারিত্ব বজায় রাখছে।’
শাকিল হোসেন আরও বলেন, ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ১১ মাস যাবৎ আবাসিকতার নোটিশ দেওয়া হচ্ছে না। প্রাধ্যক্ষকে কেন জবাবদিহির আওতায় নেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসন চায় না এই হলগুলোর সমস্যার সমাধান হোক। তিনি প্রায় এক বছর আগে কক্ষ পরিবর্তনের আবেদন করেও এখনো সুযোগ পাননি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। এ জন্য সাময়িকভাবে অবস্থান কর্মসূচি ত্যাগ করেছি।’
হাসান শাহরিয়ার খন্দকার আলিফ বলেন, ‘দ্বিতীয় বর্ষ থেকে হলের আবাসিকতার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে চতুর্থ বর্ষে উঠে গেছি, এখনো আবাসিকতা পাইনি। প্রশাসনের আশ্বাসে সাময়িকভাবে কর্মসূচি ত্যাগ করেছি।’ কিন্তু দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে আবারও কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘এটি হলের বিষয়। তারা প্রশাসন ভবনের সামনে এসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। পরে তাদের ডেকে নিয়ে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি, যেন তাদের বিষয়টি সমাধান করেন।’
সৈয়দ আমীর হলের প্রাধ্যক্ষ এ কে এম মাহমুদুল হক বলেন, ‘কিছুদিন আগে হলে আবাসিকতার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আলিফ আবেদন করেননি। মৌখিক পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পরে ওই শিক্ষার্থী আমার কাছে এসেছিল। আমি তাকে কিছুদিন পরে যোগাযোগ করতে বলেছি, কিন্তু তিনি যোগাযোগ করেননি। হলে আসন খালি হওয়া মাত্রই তাকে আসন বরাদ্দ দেওয়া হবে।’