রাবির যৌ*ন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল অভিযোগ বাক্সেই সীমাবদ্ধ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাবি : যৌন হয়রানি প্রতিরোধ করতে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ‘যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল’ প্রতিষ্ঠা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এ সেল পরিচালনা করার জন্য গঠন করা হয় কমিটিও। তবে কমিটি থাকলেও এর কার্যক্রম দৃশ্যমান না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা প্রায় ৯২ ভাগ শিক্ষার্থীই এ সেল সম্পর্কে জানেন না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন রাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুল আলীম। তার গবেষণা থেকে জানা যায়, ২০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৮৪ জনই এই সেল সম্পর্কে জানেন না। যা শতকরা হিসাবে ৯২ ভাগ। শিক্ষার্থীরা জানেন না এই সেল কোথায় অবস্থিত, কীভাবে অভিযোগ করতে হয় এবং এর প্রধান কে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের একটি কক্ষে সেলটির কার্যালয়। সেখানে একটি অভিযোগ বাক্স আছে। তবে প্রায় সব সময় বন্ধ থাকে সেলের কার্যালয়ের জন্য বরাদ্দ করা কক্ষ। কোনো মিটিং থাকলে খোলা হয় কার্যালয়। এ ছাড়া কমিটির পক্ষ থেকে প্রচারণামূলক দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। 

এ সেল নিয়ে অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা ঢালী বলেন, ‘আমরা অধিকাংশ শিক্ষার্থীই জানি না এই সেল সম্পর্কে। আমার জানা মতে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কখনোই এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালায়নি। যে সেল সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে এখনো নিজের অস্তিত্বের জানান দিতে পারেনি, সেই সেল কীভাবে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ করতে পারবে তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। এর দায় মূলত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরই।’

আইন বিভাগের এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা ৯০ ভাগ শিক্ষার্থীই যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন না। কারণ শেষ পর্যন্ত এ ধরনের অভিযোগের কোনো বিচার পাওয়া যায় না। প্রশাসনের উচিত এই ধরনের অভিযোগকে আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। সেই সঙ্গে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে এসব অভিযোগের বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।’

এ সেল সম্পর্কে গ্রাফিক্স ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাসমীম তাসফিয়া হক আরশি বলেন, ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধবিষয়ক এই সেল সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না।

সাম্প্রতিক সময়ে আমরা শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকি কিন্তু হয়রানির শিকার হওয়ার পর কার কাছে অভিযোগ করতে হবে তা জানি না। অভিযোগ করার বিষয়টি আমাদের জন্য আরও সহজ করা হোক। সেই সঙ্গে অভিযোগের বিষয়টি গোপনীয়তার সঙ্গে করা হোক। বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা শিক্ষক দ্বারা হয়রানির শিকার হয়। তবে একাডেমিক অবস্থার কথা চিন্তা করে কেউ অভিযোগ করার সাহস করে না। মাঝে মাঝে অনেক অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়া হয়। ভালো করে প্রচার করার মাধ্যমে এ সেল সম্পর্কে সবাইকে অবগত করলে হয়তো আমরা শিক্ষার্থীরা এসব সমস্যা থেকে প্রতিকার পেতে পারি।’

এ বিষয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক তানজিমা জোহরা হাবিব বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমাদের দৃশ্যমান কোনো প্রচারণা চালানো হয়নি। তবে জানুয়ারিতে ক্যাম্পাস খুললে প্রত্যেক বিভাগ থেকে দুজন শিক্ষার্থী এবং একজন শিক্ষক নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করব। আমাদের নির্দিষ্ট স্টাফ দেওয়া হয়নি। তাই নিয়মিত খোলা হয় না। তবে মিটিংয়ের সময়ে খোলা হয়। আর অভিযোগের প্রসেসটি মোটামুটি সহজ আছে। আমাদের বক্স রাখা আছে। যে কেউ চাইলে অভিযোগ রেখে যেতে পারে। আমাদের কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুটি রিপোর্ট পেশ করেছি। বর্তমানে কোনো অভিযোগ জমা নেই।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057289600372314