রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে কৃষ্ণ রায়কে আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার বলেন, ‘ক্যাম্পাস হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ জায়গা। কিন্তু শিক্ষার্থী ও আমরা ক্যাম্পাসে সব থেকে অনিরাপদ। মেয়েদেরও নির্যাতন করে বিবস্ত্র অবস্থায় ভিডিও করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব র্যাংকিং নিয়ে চিন্তা করছি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে পারছি না। কৃষ্ণ রায়ের ওপর অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছে। প্রায় মৃতের মতো অবস্থা তার। তার বাবা নেই, অসহায় পরিবার থেকে উঠে আসা। সে এ নির্যাতনের চিত্র ভুলবে কীভাবে? আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই, না হলে আমাদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে।’
লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্বপ্নীল রহমান বলেন, ‘এমন ঘটনা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে সুষ্ঠুভাবে চলতে না দেওয়ার একটি অশুভ চক্রের কাজ। এমন ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিন। তাহলে দেখা যাবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এমনটা আর ঘটবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন আর কোনো কৃষ্ণ রায় নির্যাতন না হয় প্রশাসনের কাছে সেই দাবি জানাচ্ছি।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের বসবাসের উপযোগিতা হারাচ্ছে। নিয়মিত সব হলে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিছুই করতে পারছে না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে থাকার পরিবেশ নাই। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড না থামলে আরও কঠোর অবস্থানে যাবো।’
এদিকে দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নৈরাজ্য ও নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবিতে প্রতীকী অনশন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খাঁন। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খানের সঙ্গে প্রশাসন ভবনের সামনে অনশনে যোগ দেন বিক্ষোভ সমাবেশ থাকা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে কৃষ্ণ রায়কে শিবির ট্যাগ দিয়ে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে অত্র হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তিনি।