রাবির হলে ৯০০ টাকার ফি বেড়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

রাজশাহী প্রতিনিধি |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলে ভর্তির ফি বছরে ৯০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তির পর কর্তৃপক্ষ হল সংযুক্ত করে দেয়। হলে আসন না দিলেও এই টাকা সংযুক্তি ফি হিসেবে নেয় হল প্রশাসন।

এই ফি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। প্যারিস রোডে এই কর্মসূচির আয়োজন করে স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন। এতে তাঁরা নানা ধরনের লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। সেগুলোতে লেখা ছিল ‘হল ফি ৯০০ টাকা থেকে ২৮০০ কেন? জবাব চাই’, ‘লাগামহীন হল ফি বন্ধ করো’, ‘শিক্ষা ব্যয় কমাতে হবে’, ‘প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষরের দাম ৫০ টাকা’, ‘সিট প্রদানে গণবিজ্ঞপ্তি নয় কেন’ ইত্যাদি।

 

মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সদস্যসচিব মুজাহিদ হাসান। এতে ১০ মার্চের মধ্যে অতিরিক্ত ফি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলেন, এই হল ফি নিলেও হলে আসন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। হলগুলোর আসন রাজনৈতিকভাবে দখলে থাকে। এই ফি অযাচিতভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত যেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাতিল করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়।

মানববন্ধনে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী অপু মুন্সী বলেন, ‘গত বছর হল সংযুক্তি ফি ছিল ৯০০ টাকা। সেটা কীভাবে রাতারাতি বাংলাদেশের ব্রয়লার মুরগির মতো বেড়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা হয়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানতে চায়, হলে কী এমন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হলো যে হল ফি ২ হাজার ৮০০ টাকা হয়ে গেল? এই টাকা দিয়েও তো আমরা হলে উঠতে পারছি না।’

আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান বলেন, বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে যখন বলা হচ্ছে কীভাবে খরচ কমাতে হবে, মানুষ কীভাবে অল্প খরচে তার দৈনন্দিন চাহিদা মেটাবে, তখন অযাচিতভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে হল ফি। তাঁর এক বন্ধু সকালবেলা নাশতা করেন না। বেলা দুইটার দিকে ভাত খান। খাওয়ার সময় বেশি ভাত খান, যাতে রাতে আবার খাওয়া না লাগে। তাঁর বাবা একজন রিকশাচালক। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। টাকার কারণে তিনি ঠিকমতো ভাত খেতে পারেন না। এই অযাচিত ফি তিনি কীভাবে দেবেন?

স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী সজীব বলেন, হল ফি প্রাধ্যক্ষ পরিষদ থেকে পাস হয়ে ৯০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। তাই তাঁরা মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি বিবেচনায় নেবে। তা না হলে শিক্ষার্থীরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ও বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ সৈয়দা নুসরাত জাহান বলেন, শিক্ষার্থীরা ৯০০ টাকা বলছেন। তবে এটা বিভিন্ন হলে বিভিন্ন রকম ছিল। তাঁর জানামতে এটা সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ছিল। তাঁরা এটা সমন্বয় করতে চেয়েছিলেন। এ ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে সবকিছুরই দাম বেড়েছে। হলগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বরাদ্দ দেয় না। হলগুলো নিজস্ব আয়ে চলে। তাই ২ হাজার ৮০০ টাকা করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যেহেতু এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, তাই তাঁরা এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার এ নিয়ে আলোচনা হবে। সেখানে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056040287017822