অবকাঠামো নির্মাণ এখনো শুরু হয়নি। তার আগেই রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ৫৩৩ কোটি টাকা। আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে রামেবির কার্যক্রম শুরু হয়। এত দিন ধরে অস্থায়ী কার্যালয়ে শুধু একাডেমিক কার্যক্রমই চালিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। অবকাঠামো নির্মাণ না হওয়ায় রামেবি ক্যাম্পাসের কোনো কাজ এত দিনেও শুরু হয়নি। হাসপাতালের অবকাঠামোর জন্য এ পর্যন্ত জমিও অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
রামেবি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৪ জুন রামেবি স্থাপন প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন হয়। সে সময় নির্মাণসামগ্রীর দাম ধরা হয় ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের হিসাবে। তখন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্প নিয়ে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরুর আগেই ডিপিপি সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত ডিপিপিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় রামেবির ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। অর্থাৎ কাজ শুরুর আগেই রামেবির নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ৫৩৩ কোটি টাকা।
রামেবির জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, আগে বরাদ্দ করা ১ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা থেকে জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ খাতে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৫৮৪ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। সংশোধিত ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ডিপিপির অর্থ ছাড় হলে ভূমি অধিগ্রহণ খাতের বকেয়া ১৭২ কোটি ১৭ লাখ টাকা জেলা প্রশাসকের সংশ্লিষ্ট খাতে দেওয়া হবে।
কাজ শুরুর আগেই ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে রামেবি উপাচার্য অধ্যাপক এ জেড এম মোস্তাক হোসেন বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের রেট শিডিউল অনুযায়ী প্রথম প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছিল। কিন্তু এখন আগের মূল্যে কাজ করা সম্ভব নয়। এ কারণে ডিপিপি সংশোধন করতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েই একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ডিপিপি তৈরিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছি। আশা করছি, খুব শিগগির সংশোধিত ডিপিপির টাকা পাওয়া যাবে। এরপর পর্যায়ক্রমে ভূমি অধিগ্রহণ ও অবকাঠামো নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
উল্লেখ্য, রাজশাহী মহানগরীর বড় বনগ্রাম এবং পবা উপজেলার বারইপাড়া ও বাজেসিলিন্দা মৌজার প্রায় ৬৮ একর জায়গায় রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হবে। রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ১ হাজার ২০০ শয্যার একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল। ১০টি চিকিৎসা অনুষদের অধীনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৮টি বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি দেওয়া হবে। এ ছাড়া চিকিৎসাসেবার মানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম চলবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বর্তমানে রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সরকারি-বেসরকারি ৭৭টি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের এমবিবিএস, বিডিএস, ফিজিওথেরাপি ও ইউনানি মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি, বিএসসি নার্সিং এবং মেডিক্যাল টেকনোলজি কোর্সের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এসব কোর্সের শিক্ষার্থী নিবন্ধন, পরীক্ষার ফরম পূরণ, ফলাফল তৈরিসহ সব ধরনের তথ্য অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে সম্পন্ন করা হচ্ছে।