দৈনিক শিক্ষাডটকম, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ২৭১টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ২৩০টিতে আজও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। পুরো উপজেলার মাত্র ৩২টি প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় শহীদ মিনার রয়েছে। ২১টি মাধ্যমিক, ৩টি উচ্চ মাধ্যমিক ও দুটি কামিল মাদরাসার একটিতেও শহীদ মিনার নেই।
অপরদিকে, রায়পুর উপজেলা পরিষদের পাশেই শহীদ মিনার হলেও বাস্তবে শহীদ মিনারটি সারাবছর অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকে। কেবল ফেব্রুয়ারি মাসেই শুরু হয় পরিচ্ছন্নতা অভিযান।
রায়পুর- চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে, নতুনবাজার সড়কে মহিলা কলেজ, চরআবাবিল ইউপির হায়দরগঞ্জে রচিম উদ্দিন, চরপাতা ইসহাকিয়া মৈত্রী, এলকেএইচ উপকূলীয় এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটি পরিত্যক্ত দেখা যায়। নির্মিত শহীদ মিনারগুলোর অধিকাংশই অরক্ষিত।
রায়পুর উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলায় ১২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৮টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। ৬৮টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কিন্ডারগার্টেন) চালু থাকলেও একটিতেও শহীদ মিনার নেই। মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫৫টি। এগুলোর মাত্র ২৩টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। মাধ্যমিক সমমানের ২১টি দাখিল মাদরাসার কোনোটিতেই শহীদ মিনার নেই।
রায়পুর সরকারি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে। অন্য ৪টি বেসরকারি কলেজের মধ্যে ৩টিতে থাকলেও নেই রুস্তম আলী ডিগ্রি কলেজে। রায়পুর কামিল মাদরাসা (আলিয়া) অধীনে থাকা পুরাতন শহীদ মিনার রয়েছে। হায়দরগঞ্জ টিআরএম কামিল মাদরাসাসহ ৫টি ডিগ্রি সমমানের ফাজিল মাদরাসায় শহীদ মিনার নেই।
রায়পুর পাইলট বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর নাহার বলেন, জমি ও প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে আমরা শহীদ মিনার নির্মাণ করতে পারিনি। এ জন্য উপজেলা সদরের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাই। এবার শহীদ মিনার না থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়া হলে আমাদের বিদ্যালয়ের নাম তালিকাভুক্ত করে দিয়েছি।
একই বক্তব্য দেন চরআবাবিল, চরপক্ষি, চরইন্দ্রুরিয়া, কাঞ্চনপুর, বামনী, সোনাপুর, দেনায়েতপুর, রাখালিয়া, চরবংশীসহ ১৫টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল হক বলেন, সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে নিজ আঙিনায় শহীদ মিনার নির্মাণ করতে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান জায়গা ও অর্থের অভাবে তা করতে পারেনি। মাদরাসাগুলোতেও নিজস্ব প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার নেই। সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করতে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। না হলে প্রতিষ্ঠান এমপিও স্থগিত রাখবে কুমিল্লা বোর্ড।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম বলেন, সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায় সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় নির্মাণের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। শহীদ মিনার না থাকা বিদ্যালয়ের তালিকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রতি মাসে পাঠানো হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা বিনতে আমিন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার না থাকাটা দুঃখজনক। উপজেলার সবগুলো প্রতিষ্ঠানে যাতে শহীদ মিনার নির্মাণ হয় সে উদ্যোগ নেয়া হবে।