বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অ্যাক্ট ২০১৮ ও কাউন্সিলের সংস্কারসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
তাদের ভাষ্য, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রণীত রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের একটি ধারায় 'স্পীচ আন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট' এর যোগ্যতার মাপকাঠি হিসাবে একমাত্র এই বিষয়ের ওপর বিএসসি ডিগ্রিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, যা বৈষম্যমূলক, ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিভাগটির তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুল হাসান, নিসর্গ নিঝুম, নাবিদ নেওয়াজ এবং মাসুম বিল্লাহ। এ সময় বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই এক্ষেত্রে বিএসসি, বিএসএস, এবং বিএ ডিগ্রিকে সমানভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয় এবং কর্মক্ষেত্রেও সমান সুযোগ দেয়া হয়। সেখানে আমাদের দেশে কেনো টেকনিক্যাল ডিগ্রির আদলে শুধুমাত্র বিএসসি ডিগ্রির মধ্যেই একে সীমাবদ্ধ রাখাটা অযৌক্তিক।
রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলকে ‘বৈষম্যবাদী’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের কোনো অংশীজনকে রাখা হয়নি। এছাড়া তাদের মনগড়া ও ভিত্তিহীন একটি পকেট কমিটি এই বিভাগের বিরুদ্ধে একটি হয়রানিমূলক রিট করে যা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু ও হীন মানসিকতার পরিচায়ক।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চার দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল এ্যাক্ট-২০১৮ এর বৈষম্যমূলক ধারা সংস্কার করে স্পীচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট এর এর যোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে বিএসসি ইন স্পীচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজি এবং অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে এমএসএস ইন স্পীচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজি ডিগ্রি তফসিলভুক্ত করতে হবে; বিদ্যমান ৩২ সদস্য বিশিষ্ট রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের প্রশ্নবিদ্ধ সদস্যদের বাদ দিয়ে সকল অংশীদারদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে কাউন্সিলের যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পেশাজীবীদের প্রতি হয়রানিমূলক রিট উইথড্র করতে হবে এবং উপরোক্ত দাবিগুলো পূরণ করার পূর্বে এই রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের মাধ্যমে কোনো তফসিল বা নীতিমালার খসড়া যেমন, রিহ্যাবিলিটেশন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি বিষয়ক নীতিমালা ২০২৪ ও রিহ্যাবিলিটেশন পেশাজীবির নিবন্ধন ও প্র্যাকটিশনার লাইসেন্স প্রদান ২০২৪ অনুমোদন করা যাবে না।
সংবাদ সম্মেলন থেকে দ্রুত এসব দাবি মেনে নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা। একইসাথে দাবিসমূহ মেনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকারও হুশিয়ারি প্রদান করেন তারা।