কামরুজ্জামান সুইট, ঝালকাঠি: ঝালকাঠিতে ঘূর্ণিঝড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেড়িবাঁধ, কৃষি ও মৎস্যসহ নানা খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার সব জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। ঝড় ও পানিতে বিধ্বস্ত হয়েছে জেলার বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্যে জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকার মতো।
ঝালকাঠি জেলা প্রাথমকি শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার রাজাপুর উপজেলায় ২৪টি, কাঁঠালিয়া উপজেলায় ১৯টি, সদর উপজেলায় ৫০টি এবং নলছিটি উপজেলায় ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ মোট ১০৭টি বিদ্যালয় ক্ষতি হয়। এসব প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে গাছ পড়ে, চাল উড়ে যায় এবং দরজা-জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অশোক কুমার সমদ্দার বলেন, কোনো বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ক্লাস বন্ধ আছে কি না সে তথ্য আমার জানা নেই। সব ভবনই শতভাগ পাকা থাকায় ক্লাস বন্ধ থাকার কথা নয়।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৯৫টি। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯৫টি। এ ছাড়া মাদরাসা ও কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭৫টি।
এর মধ্যে কাঁঠালিয়া উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭টি বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। এগুলো হলো-বাঁশবুনিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসা, জাঙ্গালিয়া দাখিল মাদরাসা, পূর্ব ছিটকী দারুসুন্নাত দাখিল মাদরাসা, ছিটকী নেছারিয়া আলিম মাদরাসা, পাটিখালঘাটা আইডিয়াল নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহিষকান্দি ভায়লাবুনিয়া হাসেমিয়া দাখিল মাদরাসা ও মফিজ উদ্দিন ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা।
জাঙ্গালিয়া দাখিল মাদরাসা সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে মাদরাসাটি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানের আলমিরা, আসবাবপত্র, প্রয়োজনীয় নথিপত্র, চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ও ব্ল্যাক বোর্ড সম্পূন্ন নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
পূর্ব ছিটকী দারুসুন্নাত দাখিল মাদরাসার সুপার মো. আ. সালাম জানান, মাদরাসার ওপর গাছ পড়ে সম্পর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এতে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ও ব্ল্যাক বোর্ড ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
মহিষকান্দি ভায়লাবুনিয়া হাসিমিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার সৈয়দ মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠানটির আসবাবপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুনিল চন্দ্র সেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্ত তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে কাঠালিয়া উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭টি বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। শিগগির এগুলোতে ক্লাস চালুর ব্যবস্থা করা হবে।