রোগীদের মৃত্যু দেখছে বেসরকারি হাসপাতাল!

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনা ভাইরাসের সঙ্গে চিকিৎসাযুদ্ধে গোটা পৃথিবী ব্যস্ত। অনেক দেশের চিকিৎসক অবসর ভেঙে চিকিৎসাসেবায় ফিরেছেন। মানুষের সেবার মহান ব্রত নিয়ে তাঁরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের অবস্থা অনেকটাই বিপরীত। চট্টগ্রামের অবস্থা আরও শোচনীয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য কর্মীদের উপস্থিতি কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। উপস্থিতির গড় হার ১৫ শতাংশের মতো। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের চিকিৎসাব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে সরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসকদের উপস্থিতি কমেছে বলেও তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে উচ্চপর্যায়ে। দেশব্যাপী চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত হওয়ায় মাঠ পর্যায়ের রিপোর্ট দেশের শীর্ষ মহলের কাছে পৌঁছেছে। সোমবার (৬ এপ্রিল) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন এস এম রানা।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, চট্টগ্রামের একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা প্রায় প্রতিদিনই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের তথ্য সংগ্রহ করছেন। সেই রিপোর্ট চূড়ান্ত করে পাঠানো হচ্ছে উচ্চপর্যায়ে। এমন একটি রিপোর্ট প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম নগরীতে সাধারণ সর্দি-কাশির চিকিৎসাও হচ্ছে না। প্রায় সব বেসরকারি হাসপাতালই হাত গুটিয়ে বসে আছে। দেশের এই চরম দুঃসময়ে চিকিৎসাব্যবস্থা কার্যত অচল করে দিয়েছে।

গত ২ এপ্রিল সাধারণ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হালিশহর এলাকার এক বাবা তাঁর শিশু সন্তানকে জ্বরের চিকিৎসা করাতে না পেরে হতাশ হয়ে যান কোতোয়ালি থানায়। কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন এ বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে ফোন করেন নগর পুলিশের উপকমিশনার আবদুল ওয়ারিশকে। তিনি ফোন করেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বিকে। শেষ পর্যন্ত সিভিল সার্জনের পরামর্শে শিশুটিকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে শিশুটির চিকিৎসা হয়।

আবার সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা এক নারী ছিলেন নগরীর মেহেদীবাগ এলাকার ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে আইসিইউ থেকে নামিয়ে দেয়। এরপর গত বুধবার রাতে ওই নারীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর পরীক্ষায় জানা গেল, ওই নারী করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। একইভাবে গত শুক্রবার রাতেও পতেঙ্গা থানার এক নারীর মৃত্যু হয় চিকিৎসার অভাবে। ওই নারীর সন্তান নানাভাবে চেষ্টা করেও চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালে মায়ের চিকিৎসা করাতে পারেননি। একইভাবে হাটহাজারী উপজেলার বাসিন্দা আরেক নারীর মৃত্যুও হয় চিকিৎসার অভাবে। এই দাবি ওই নারীর স্বজনদের। এভাবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো চিকিৎসাব্যবস্থা অঘোষিতভাবে বন্ধ করে দেয়ায় চট্টগ্রামে প্রতিদিনই বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের একটি গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিটি হাসপাতালে গিয়ে জরিপ করেছে। কোন হাসপাতালে কতজন চিকিৎসক-নার্সসহ অন্যান্য পদে কর্মরত আছেন, ডিউটিতে কতজন উপস্থিত আছেন, সেই তথ্য নেয়া হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027799606323242