র‌্যাগিংয়ের শিকার : ক্যাম্পাস ছাড়লেন হাবিপ্রবির রিয়াদ

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি |

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) র‌্যাগিংয়ের শিকার এক শিক্ষার্থী আতঙ্কে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। ক্যাম্পাস ছাড়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে র‌্যাগিংয়ের বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু বিচার পাননি। তবে প্রশাসনের দাবি, ঘটনা তদন্তের পাশাপাশি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের স্থাপত্য বিভাগের ২২তম ব্যাচের প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তার নাম রিয়াদ হোসেন। গত বুধবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যান। এর আগে নির্যাতনের কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ডিন ও রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।

 

লিখিত অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী জানান, গত ২৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ ভবনের তৃতীয় তলার ৩৩৬ নম্বর কক্ষে ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ডেকে নেন স্থাপত্য বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। সেখানে এক ঘণ্টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত শারীরিক ও মানসিকভাবে তাঁদের নির্যাতন করা হয়।

ওই শিক্ষার্থী বিষয়গুলোর প্রতিবাদ করলে তাঁর গলা টিপে ধরেন একজন। পরের দিন তাঁকে ফের ডেকে নেওয়া হয়। এ সময় ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাঁকে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দেন। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই শিক্ষার্থী।

রিয়াদ ঢাকার আইপি এইচ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগে ভর্তি হন। তার বাবা মফিজুর রহমান পরিবার নিয়ে ঢাকার মহাখালীর কড়াইল এলাকায় থাকেন।

মফিজুর রহমান বলেন, নিজে বেশি পড়ালেখা করতে পারিনি। অনেক বড় স্বপ্ন আমাদের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে। ও মেধায় অনেক ভালো। কোনো দিন ওর মতের বিরুদ্ধে আমরা কিছু বলিনি। রিয়াদ সব সময় তার ভালো-মন্দ নিজেই বিচার করেছে। সে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে তার অসুবিধার কথা জানিয়েছে। এখন বিষয়গুলোর সমাধান হলে, শিক্ষকদের কাছে আশ্বাস পেলে ছেলেকে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাব।

রিয়াদও একই কথা বললেন। তিনি বলেন, ‘এখনো স্যারদের ওপরে ভরসা রেখেছি। চেয়ারম্যান স্যার ও প্রক্টর স্যার ফোন করেছিলেন। ফিরে যেতে বলেছেন। বাবার সাথে পরামর্শ করে পরে সিদ্ধান্ত নেব।’

জানতে চাইলে স্থাপত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আবু তোয়াব শাহরিয়ার বলেন, ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁকে বোঝানো হয়েছে সিনিয়রদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ শিখতে হয়। পরে বিভাগের অন্য শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুনেছি, ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে চলে গেছে। তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁকে আসতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মামুনুর রশিদ বলেন, ওই শিক্ষার্থীর আবেদনের পারপ্রেক্ষিতে বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সতর্ক করা হয়েছে। এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের নির্দেশে অধ্যাপক বিকাশ চন্দ্র সরকারকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীকে কেউ উসকানি দিয়ে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051178932189941