খালেদা জিয়ার পুত্র লন্ডনে বসে মনোনয়ন বাণিজ্য করেন, একই নির্বাচনী এলাকায় একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেন টাকার বিনিময়ে। আজ বুধবার চাঁদপুরে এক উদ্বোধনী ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার এক পুত্র মারা গেছেন, আরেক পুত্র বেঁচে আছেন। তিনি দেশের জন্য কী করছেন! তিনি লন্ডনে বসে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার নির্দেশ দেন। লন্ডনে বসে মনোনয়ন বাণিজ্য করেন এবং একই নির্বাচনী এলাকায় একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেন টাকার বিনিময়ে। তাহলে তফাতটা একেবারে সামনে। বঙ্গবন্ধু কন্যার পুত্র ও কন্যা কী করছেন, আর তারা কী করছেন! কথায় বলে-বৃক্ষ তোমার নাম কী, ফলে পরিচয়।’
দীপু মনি বলেন, ‘আজকে আমরা সঠিক পথ বেছে নেব। আমাদের সন্তানেরা যেন বিপথে না যায়, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি না হয়। কারণ ওই লন্ডনে বসে যে কাজ করে, ষড়যন্ত্র করে, সে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদীদের মূল হোতা। আমরা আমাদের সন্তানদের সে রকম জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হিসেবে চাই না। আমরা চাই তারা জ্ঞানে-বিজ্ঞানে ও প্রযুক্তিতে বড় এবং ভালো মানুষ হবে। আইনসম্মত যে কোনো পেশাই হোক, সে কাজ করে সুখী হবে। তাই আমাদের সে নেতৃত্বই বেছে নিতে হবে, যে নেতৃত্ব আমাদের সে পথেই নিয়ে যায়। সে কারণে শেখ হাসিনার সরকারের কোনো বিকল্প নেই।’
বুধবার বিকেলে চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠে চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) সংসদীয় আসনে গত তিন বছরে (২০২১-২০২৩) বাস্তবায়িত ও চলমান বিভিন্ন উন্নয়মূলক কাজের উদ্বোধন ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দীপু মনি।
নির্বাচনী এলাকার সাধারণ মানুষ ও কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দীপু মনি বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর আমি আপনাদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। কারণ আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। এ সময়ে আমি যত উন্নয়নকাজ করতে সক্ষম হয়েছি, তা আপনাদেরই জন্য। কারণ আপনারা নির্বাচিত না করলে আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেতাম না। আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করবেন এবং যেসব ভালো কাজ করেছি সেগুলোর কৃতিত্ব আপনাদের।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। আমি নির্বাচনের আগে কোনো ওয়াদা করতে চাই না। কারণ আপনারা বিগত দিনে যেসব উন্নয়নকাজের জন্য আমার কাছে বলেছেন, আমি তা সাধ্যমতো বাস্তবায়ন করবার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে আবারও আপনারা সুযোগ করে দিলে, আমি কাজ করব। কারণ চাঁদপুরকে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিদিন মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেন। দেশের কল্যাণে কাজ করেন। যে কল্যাণের কথা আমাদের প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজানের বাক্য বলা হয়। তিনি দেশের প্রতিটি অসহায় মানুষের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। ভূমিহীন মানুষদের ঘর করে দিয়েছেন। তাই শেখ হাসিনার সরকারের কোনো বিকল্প নেই।’
এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন—চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইউসুফ গাজী, চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. এ. ওয়াদুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাছরিন, চাঁদপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াছ, চাঁদপুর সদরের রাজ রাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হজরত আলী বেপারী।
সভাপতির বক্তব্য দেন—চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান। যৌথ সঞ্চালনায় ছিলেন—চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আলী এরশাদ মিয়াজী ও হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন পাটওয়ারী।
উপস্থিত ছিলেন—চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান প্রমুখ।