লীলা নাগ রায়ের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী এবং সেখান থেকে প্রথম এমএ ডিগ্রিধারী বিপ্লবী লীলা নাগ রায়ের আজ মৃত্যুবার্ষিকী। বিয়ের আগে তার নাম ছিলো লীলা নাগ। পরে পরিচিতি পান লীলা রায় নামে।

লীলা নাগ ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দের ২ অক্টোবর আসামের গোয়ালপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন সাংবাদিক, জনহিতৈষী ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় ব্যক্তি। লীলা রায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সহকারী ছিলেন। লীলা রায়ের পিতা গিরীশচন্দ্র নাগ অবসরপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। তার পিতৃ-পরিবার ছিলো তৎকালীন সিলেটের অন্যতম সংস্কৃতমনা ও শিক্ষিত পরিবার। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে লীলা নাগ বিয়ে করেন বিপ্লবী অমিত রায়কে। লীলার ছাত্রজীবন শুরু হয় ঢাকার ইডেন স্কুলে। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে বিএ পাস করেন।
পরীক্ষায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং পদ্মাবতী স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল়য়ে ইংরেজি বিষয়ে এমএ ভর্তি হন। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় বিভাগে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনিই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এমএ ডিগ্রিধারী।

তখনকার পরিবেশে সহ-শিক্ষার কোন ব্যবস্থা ছিলো না বলে লীলা রায়ের মেধা ও আকাঙ্ক্ষা বিবেচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভাইস চান্সেলর ড. হার্টস তাকে পড়ার বিশেষ অনুমতি প্রদান করেন।

লীলা রায় ঢাকা কলেজেও পড়েছেন। এ কলেজে তার এক ক্লাস ওপরের ছাত্র ছিলেন সাহিত্যিক কাজী মোতাহার হোসেন। লীলা রায় সম্পর্কে তিনি তার স্মৃতিকথা নামক প্রবন্ধ সংকলনে লেখেন, ‘এঁর মত সমাজ-সেবিকা ও মর্যাদাময়ী নারী আর দেখি না। এঁর থিওরী হলো, নারীদেরও উপার্জনশীল হতে হবে, নইলে কখনো তারা পুরুষের কাছে মর্যাদা পাবে না।

তাই তিনি মেয়েদের রুমাল, টেবিলক্লথ প্রভৃতির ওপর সুন্দর নক্সা এঁকে বিক্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। এসব বিক্রি করে তিনি মেয়েদের একটা উপার্জনের পন্থা উন্মুক্ত করে দেন।’ বাঙালি নারীদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারে লীলা রায় বিশেষ ভুমিকা পালন করেন।

লীলা রায় ঢাকার আরমানীটোলা বালিকা বিদ্যালয়, কামরুন্নেসা গার্লস হাই স্কুল ও শেরে বাংলা বালিকা কলেজ (তৎকালীন নারীশিক্ষা মন্দির) প্রতিষ্ঠা করেন। ভারত ভাগের পর তিনি কলকাতায় চলে যান এবং সেখানেও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
লীলা রায় ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেত্রী ছিলেন। এজন্য কয়েকবার তাকে কারাবরণ করতে হয়। তিনি মহিলা সমাজে মুখপত্র হিসেবে ‘জয়শ্রী’ নামে একটি পত্রিকা বের করেন। লীলা ছবি আঁকতেন, গান গাইতেন ও সেতার বাজাতে জানতেন। দেশভাগের দাঙ্গার সময় নোয়াখালীতে তিনি গান্ধীজীর সাথে দেখা করেন। তিনি ‘দিপালী সংঘ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে কলকাতায় এই মহীয়সী নারীর জীবনাবসান ঘটে।

 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025520324707031