উপ মহাদেশের প্রখ্যাত সংগীত ব্যক্তিত্ব শচীন দেব বর্মণের জন্মদিন আজ। তিনি ছিলেন একাধারে জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকার, গায়ক ও লোকসংগীত শিল্পী। সংগীত জগতে তিনি এস ডি বর্মণ হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। তবে কাছের লোকজনের কাছে শুধু শচীন কর্তা। প্রায় একশো বছর পার হওয়ার পরও বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে তার কালোত্তীর্ণ গানের আবেদন একটুও কমেনি।
এসডি বর্মণ জন্ম ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। ত্রিপুরার বিখ্যাত চন্দ্রবংশীয় মানিক্য রাজপরিবারের নয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। তার বাবা নবদ্বীপচন্দ্র দেববর্মণ ছিলেন একজন সেতারবাদক এবং ধ্রূপদী সংগীতশিল্পী। আর মা মণিপুরি রাজবংশের মেয়ে নিরুপমা দেবী।
শচীন দেববর্মণ ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে কুমিল্লা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং ওই কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। পরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর কলকাতা চলে আসেন এবং ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলকাতায় লেখাপড়া করার সময়ই তিনি গায়ক হিসেবে পরিচিতি পান।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে অল ইন্ডিয়ান মিউজিক কনফারেন্সে তিনি গান গেয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে বেঙ্গল মিউজিক কনফারেন্সে ঠুমরি পেশ করে ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁকে মুগ্ধ করেছিলেন। শেখ ভানুর লেখা ‘নিশিথে যাইয়ো ফুলবনে’ দেহ ও সাধনতত্ত্বের এই গানটিকে তিনি প্রেমের গানে রূপান্তর করলেন কবি জসীমউদ্দীনকে দিয়ে। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে তার কণ্ঠে পাওয়া গানটি রেকর্ড করা হয়েছিলো যা এখনও সমান জনপ্রিয়।
তার পাওয়া পুরস্কারের মধ্যে -বেঙ্গল সর্বভারতীয় সংগীত সম্মেলনে স্বর্ণপদক, সংগীত নাটক একাডেমি অ্যাওয়ার্ড এশিয়া ফিল্ম সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড, সেন্ট হরিদাস অ্যাওয়ার্ড উল্লেখযোগ্য।
কালজয়ী এই সংগীত ব্যক্তিত্ব ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ অক্টোবর প্যারালিটিক স্ট্রোক হয়ে পরলোকগমন করেন।