বিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় বাংলা ও হিন্দী গানের কিংবদন্তিতুল্য সংগীত পরিচালক, সুরকার, গায়ক শচীন দেববর্মণের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তাকে এস ডি বর্মণ হিসেবেই উল্লেখ করা হয়। কিছুটা অনুনাসিক কণ্ঠস্বরের জন্য তিনি তার শ্রোতাদের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত। কেবল সংগীতশিল্পী হিসেবে নয়, গীতিকার হিসেবেও তিনি সার্থক। তিনি বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
শচীন দেব বর্মণের জন্ম ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের ১ অক্টোবর কুমিল্লার ত্রিপুরা রাজবাড়িতে৷ তবে আদিবাস বর্তমান ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে৷ তিনি ছিলেন ত্রিপুরার চন্দ্রবংশীয় মানিক্য রাজপরিবারের সন্তান। বাবা নবদ্বীপচন্দ্র দেববর্মণের কাছে সংগীত শিক্ষা শুরু করেন। মা মণিপুর রাজবংশের মেয়ে নিরুপমা দেবী। ত্রিপুরার আগরতলায় কুমার বোর্ডিং স্কুলে শচীন দেবের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়।
ত্রিপুরার রাজপরিবারের সন্তানদের এবং তথাকথিত ধনী ঘরের সন্তানদের পড়াশোনার জন্যেই এই স্কুলটি বিশেষভাবে তৈরি হয়েছিলো। পরে তার বাবা তাকে কুমিল্লার ইউসুফ স্কুলে ভর্তি করে দেন। এই স্কুলে কিছুদিন কাটিয়ে কুমিল্লা জেলা স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন শচীন দেব বর্মণ। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হন।
১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে ঐ কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। খ্রিষ্টাব্দে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বিএ ক্লাসে ভর্তি হন। ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ তে ভর্তি হন। ১৯২৫ থেকে ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কৃষ্ণচন্দ্র দে-র কাছে তিনি সংগীতের প্রথাগত তালিম নেয়া শুরু করেন। তারপর একে একে ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, সারেঙ্গীবাদক বাদল খান, সরোদবাদক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানের কাছে সংগীত ও বাদ্যযন্ত্রের শিক্ষা গ্রহণ করেছেন শচীন দেব। কুমিল্লায় থাকাকালীন বিখ্যাত কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার পারিবারিক সখ্যতা গড়ে উঠেছিলো। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।