কাগজে-কলমে স্কুলের শিক্ষার্থী ১৭৫ জন। তবে, নিয়মিত ক্লাস করেন ১২-১৩ শিক্ষার্থী। সকালে ক্লাস শুরু হলেও স্কুল বন্ধ হয়ে যায় দুপুর ১টার মধ্যেই। এমন চিত্র ময়মনসিংহ মহানগরীর শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাধা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ে প্রতি মাসে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ প্রায় দুই লাখ টাকা করে দিচ্ছে সরকার। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২ টায় বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষে কোনো শিক্ষার্থী নেই। মাঠে ১২ থেকে ১৩ শিক্ষার্থীকে দেখা গেছে।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসলিমা আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীর নাম ওঠানো আছে। কিন্তু প্রতিদিন আমরা তিন থেকে চারজন ক্লাস করি। দুই-চারজন করে এলেও স্যারেরা ক্লাস করিয়ে দুপুরের মধ্যেই ছুটি দিয়ে দেন।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী সালমা আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দুপুরের মধ্যেই স্কুল ছুটি হয়ে যায়। এরপরে স্কুলের মাঠের ভেতরে আশপাশের বখাটে ছেলেরা এসে নেশার আড্ডা জমায়।
জানা গেছে, প্রায় এক একর জমিতে ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে স্কুলে শিক্ষকের ১৩ পদের মধ্যে ৯ জন কর্মরত আছেন। পাঁচ কর্মচারীর পদের বিপরীতে আছেন ৩ জন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ খালি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাবিব উল্লাহ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ খালি। স্কুলের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, কিন্তু নিয়মিত ক্লাসে আসে না। বিশেষ করে অসচ্ছল ঘরের মেয়েরা এই স্কুলে ভর্তি হয়। অভিভাবকরা সচেতন না হওয়ায় সন্তানদের স্কুলে আসার বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেন না।স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুল খালেক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কথা শিক্ষক কর্মচারীরা কেউ তেমন একটা মানে না। প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হলে স্কুলের কিছুটা উন্নয়ন হতে পারে। তবে স্কুলে কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীরা যেন ঠিকমতো আসে সে বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।