শহীদ আরজুমনি সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যতো অভিযোগ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, বরিশাল |

বরিশালে শহীদ আরজুমনি সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম কামরুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, বরিশাল সিটি করপোরেশন মেয়র, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার ১১ জন অভিভাবক এ লিখিত অভিযোগ দেন। দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তা কাছে আসা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে বলা হয়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একজন দুর্নীতিবাজ, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম বিরোধী ও শিক্ষার্থী নির্যাতনকারী । ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে বার্ষিক পরীক্ষার সময় পঞ্চম শ্রেণির একজন ছাত্রকে মিথ্যা অভিযোগে ইংরেজি পরীক্ষা শুরু হওয়ার ঠিক ২৫ মিনিট পর বহিষ্কার করেন। এ ঘটনায় নাহিয়ান ও তার মা খুব কান্নাকাটি করেন এবং ছাত্রের লেখাপড়া ও মানসিক বিকাশে ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রধান শিক্ষক নাহিয়ানের মাকে অপমান করে লাইব্রেরি থেকে তাড়িয়ে দেন।  পুরো ঘটনাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করা হয় লিখিত অভিযোগে। 

গত ৬ জুন প্রধান শিক্ষক সেই ছাত্রকে আবার বাথরুমের কাছ থেকে ধরে নিয়ে ঢিল মারার মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসান এবং নাহিয়ানের মা-বাবাকে ফোন দিয়ে লাইব্রেরিতে এনে টিসি দেয়ার কথা বলেন ও বকাঝকাও করেন। নাহিয়ানের মাকে টিসি চেয়ে আবেদন করতে বলেন। আরো অনেক খারাপ আচরণ করেন, যা প্রধান শিক্ষক হিসেবে তার থেকে কাম্য নয়।

অভিযোগে বলা হয়, পরে ছাত্রটির মা নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, আর নাহিয়ান মুক্তিযোদ্ধার নাতি পরিচয় দেন। এতে প্রধান শিক্ষক আরোও ক্ষেপে যান। তিনি বলেন, ‘কোনো মুক্তিযোদ্ধার ছেলে, মেয়ে, নাতি, নাতনি কাউকে বিদ্যালয়ে রাখবো না।’  

২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৫ম শ্রেণির আরেকজন শিক্ষার্থীকে জোর করে টিসি দেয়া হয়। এ ছাড়া, বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রের মা হার্ট অ্যাটাক করায় ১ সপ্তাহ ওই শিক্ষার্থী স্কুলে যেতে পারেননি। পরে বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক মা ও ছেলেকে ডেকে অস্বাভাবিক আচরণ করেন। 

অভিযোগে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কম্পিউটারে ব্যবহারিক ক্লাস বাবদ ২০ টাকা করে উত্তোলন করলেও ক্লাস হয় না এবং ল্যাব তালা বদ্ধ থাকে। 

জেনারেটর বিদ্যালয়ে থাকলেও শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহার করা হয় না এবং বিদ্যালয়ের ক্যানটিনের চড়া দামে বিক্রি হওয়া খাবার কিনে খাবার জন্য বাধ্য করার অভিযোগ করেন।এ ছাড়া এসএসসি ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা জন্য ২০০ টাকা নেয়া হয় সিনিয়র শিক্ষক এমদাদুল হকের মাধ্যমে এবং শহীদ আরজুমনি সরকারি বিদ্যালয়ে প্রত্যয়নপত্র,মার্কসিট,সার্টিফিকেটসহ অফিসিয়াল কাগজ আনতে গেলে অর্থ দিতে হয়। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আাসার কথা উল্লেখ করেন অভিভাবকেরা।  

অভিভাবক ফেরদৌস জাহান নাজনীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। 

অভিভাবক মো. হেমায়েত হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে যে আচরণ করেন, তা মানা যায় না। শিক্ষার্থী অসুস্থ থাকতেই পারেন, তিনি সেটাও মানতে নারাজ। তিনি শুধু টিসি দেয়ার ভয় দেখান। 

বরিশাল বিভাগের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার উপ-পরিচালক মাহবুবা হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন , অভিযোগ পেয়েছি। ছুটি শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এ কে এম কামরুল আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে আমি অবগত নই।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রুম্পা সিকদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শহীদ আরজুমনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055451393127441